এয়ারপোর্টটি একটু আলাদা

মনে করো তোমাকে নিয়ে তোমার মা-বাবা কেনাকাটার জন্য বের হয়েছেন। গাড়ি নিয়ে একটু এগুতেই দেখলে রাস্তায় লেভেল ক্রসিং। মাথার উপড়ে টিংটিং শব্দে লাল বাতি জ্বলছে আর নিভছে। মনে মনে অপেক্ষা করছ কখন ট্রেন পার হয়ে যাবে আর তুমি বাবা-মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে যাবে। এমন সময় সবার চোখ কপালে তুলে, কানে তালা লাগিয়ে বিশাল এক বোয়িং ৭০৭ বিমান চলে গেল। তাহলে ব্যাপারটা কেমন হবে?

>> তাসলিমা নীলুবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2014, 09:10 AM
Updated : 9 July 2014, 01:15 PM

ব্যাপারটা কেমন হবে সেটা দেখার জন্য তোমাকে চলে যেতে হবে ইউরোপের ছোট্ট দেশ জিব্রালটারে। সেখানকার উইনস্টন চার্চিল রোডটি জিব্রালটার এয়ারপোর্টের রানওয়েকে দুভাগ করে সোজা স্পেনে চলে গেছে। আর এ কারণেই যখন কোনো বিমান জিব্রালটার এয়ারপোর্টে অবতরণ বা উড্ডয়ন করে তখন উইনস্টন চার্চিল রোডটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিমানের কাজ শেষ হলে আবার সেটাকে খুলে দেওয়া হয়, অনেকটা আমাদের দেশের রেললাইনের লেভেল ক্রসিংয়ের মতো।

জিব্রালটার ব্রিটিশদের অধিনস্ত দেশ এবং গুরুত্বপূর্ণ নৌ-ঘাটি। সে কারণে জিব্রালটারে ব্রিটিশদের আনা গোনার হার অনেক বেশি। তাদের এই আনা গোনাকে সহজ ও দ্রুত করতে জিব্রালটারের সুবিধাজনক স্থানে একটা বিমানবন্দর স্থাপন করা ছিল খুব গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ফলে তাড়াহুড়ো করে বানিয়ে ফেলা হয় জিব্রালটার এয়ারপোর্ট।

১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে যখন এটি যাত্রা শুরু করে, তখন এটির সামরিক গুরুত্ব বেশি  ছিল। ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এটাকে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য নির্মাণ করেছিল। সে কারণে প্রতিষ্ঠার পর এখানে শুধু সামরিক বিমান ওঠানামা করলেও বর্তমানে এই এয়ারপোর্ট থেকে সামরিক এবং পরিবহন দুই ধরনের বিমানই চলাচল করে। প্রথমদিকে এর রানওয়ের দৈর্ঘ্য কম ছিল বলে এখান থেকে পরিবহন বিমান উড্ডয়ন করতে পারত না। সে কারণে পরবর্তীতে জিব্রালটার উপসাগরে পাথর ফেলে এর রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়ানো হয়। পৃথিবীর অল্পকিছু ‘ক্লাস এ’ টাইপ এয়ারপোর্টের মধ্যে জিব্রালটার এয়ারপোর্ট অন্যতম। শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে মাত্র পাঁচশ’ মিটার দূরে এর অবস্থান। বর্তমানে স্পেন এবং যুক্তরাজ্যের বিমান সংস্থাগুলো জিব্রালটার এয়ারপোর্টে নিয়মিত যাত্রী এবং মালামাল পরিবহন করছে।
জিব্রালটার এয়ারপোর্টে যখন কোনো বিমান উড্ডয়ন কিংবা অবতরণ করার সময় হয়, তখন এয়ারপোর্টের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে লেভের ক্রসিংয়ের সংশ্লিষ্টদের সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়। নির্দেশ মোতাবেক নিরাপত্তা রক্ষীরা রাস্তার দুপাশের ব্যারিকেড নামিয়ে ফেলেন। ব্যারিকেডের সামনে গাড়িগুলো সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে থাকে যতক্ষণ না বিমানের ওঠা-নামার কাজ শেষ হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে নির্দেশ পেলে আবার ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হয়। বছরের পর বছর ধরে জিব্রালটার এয়ারপোর্ট এভাবেই চলছে। যদিও এই ব্যবস্থার কারণে বিমানের নিরাপত্তা খানিকটা বিঘ্নিত হয়, তবুও এখন পর্যন্ত সেখানে কোনো দুর্ঘটনার খবর পা