মানুষের আঙ্গুলের নাম কীভাবে রাখা হয়?

প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2013, 09:43 PM
Updated : 21 March 2013, 09:44 PM

প্রশ্নটি পাঠিয়েছে: তৌসিফ মাহমুদ ইরাজ, কাঁঠালবাগান, ঢাকা

উত্তর: মানুষের এক এক হাতে পাঁচটি করে আঙ্গুল, পায়েও তেমনই। আঙ্গুলগুলোর নাম তো জানোই- বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা ও কনিষ্ঠা। ইংরেজিতে বললে- থাম্ব, ইনডেক্স ফিঙ্গার, মিডল ফিঙ্গার, রিং ফিঙ্গার ও লিটল ফিঙ্গার।

একটা মজার জিনিস কি জানো? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় আঙ্গুলগুলোর কিন্তু কোনো নাম নেই, সংখ্যা দিয়ে ওদের চিহ্নিত করা হয়; বুড়ো আঙ্গুল ১ নম্বর, তারপর পর্যায়ক্রমে কনিষ্ঠা ৫ নম্বর আঙ্গুল। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবশ্য আমাদের আঙ্গুলগুলোকে দুইভাগে ভাগ করা হয়; বুড়ো আঙ্গুল একরকম, বাকি চারটা আঙ্গুল আরেকরকম।

এখন, এই নামগুলো কী করে এলো, তাই তো জানতে চাচ্ছো? বলছি, শোনো। প্রথম আঙ্গুলটিকে বাংলায় বলে বুড়ো আঙ্গুল বা বৃদ্ধাঙ্গুলি। কেনো বলা হয়, তা জানি না; সম্ভবত আঙ্গুলটি দেখতে বুড়োদের মতো বলেই এমন নাম দেয়া হয়েছে। ইংরেজিতে আঙ্গুলটিকে বলে থাম্ব।

দুই নম্বর আঙ্গুল, মানে ইনডেক্স ফিঙ্গারের নাম এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘ইন্ডিকেটাস’ থেকে, যার অর্থ নির্দেশ করা। খেয়াল করে দেখো, তুমি কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে দেখাতে গেলে, এই আঙ্গুল দিয়েই দেখাও। সেজন্যে এই আঙ্গুলকে ইংরেজিতে পয়েন্টার ফিঙ্গারও বলে। আরো বলে ফোরফিঙ্গার, ট্রিগার ফিঙ্গার।

পরের আঙ্গুলটার নাম মিডল ফিঙ্গার বা মধ্যমা কেনো রাখা হল, তা তো তুমি নিজেই বুঝতে পারছো; এটি পাঁচটি আঙ্গুলের মধ্যে তিন নম্বর, মানে মাঝের আঙ্গুল কিনা, তাই।

চার নম্বর আঙ্গুলটি, যার নাম রিং ফিঙ্গার, সেটি কিন্তু খুবই বিখ্যাত। প্রাচ্যে, মানে আমাদের এই অঞ্চলে আঙ্গুলটিকে ডাকা হতো নামহীন বলে। আমরা এখনো আঙ্গুলটিকে সেই নামেই ডাকি। ‘অনামিকা’ শব্দটি কিন্তু একটি সংস্কৃত শব্দ, অর্থ- নামহীন। আঙ্গুলটির চীনা নামটির অর্থও তাই। আবার, পশ্চিমের দেশগুলোতে আগে মনে করা হতো, এই আঙ্গুলটির কিছু যাদুকরী ক্ষমতা আছে। তারা মনে করতো, আঙ্গুলটির সাথে হৃদয়ের সরাসরি যোগ আছে। আর তাই, তারা বিয়ে করার পর বিয়ের আংটি এই আঙ্গুলে পড়তো। এখন সেই রীতিটিই সারা বিশ্বে প্রচলিত হয়ে পড়েছে; বড়দেরও দেখবে, বিয়ের আংটি এই আঙ্গুলে পড়ে থাকেন। তবে সব্বাই হেসে ফেলবে, যদি এখন কাউকে বলো, আঙ্গুলটির সঙ্গে হৃদয়ের সরাসরি যোগ আছে। তবে রীতিটি অনুযায়ী আঙ্গুলটির নাম এখনো সেটি-ই থেকে গেছে; আঙ্গুলটিকে এখনো রিং ফিঙ্গারই বলা হয়।

আর পাঁচ নম্বর আঙ্গুলটি, মানে হাতের একদম ছোট্ট আঙ্গুলটির নাম যে কনিষ্ঠা হবে, তা আর আশ্চর্য কী! ইংরেজিতেও নামটি লিটল ফিঙ্গার। অনেকে আবার আদর করে আঙ্গুলটিকে পিংকি ফিঙ্গারও বলেন।