ছেঁড়া টাকা জোড়ার ম্যাজিক

টাকার কোনো অংশ ছিঁড়ে গেলে কেমন মুশকিলই না হয় বলো, কেউ সেই টাকা নিতে চায় না। সবাই বলে চলবে না চলবে না। তো আমাদের মতো সব মানুষই টাকা ছিঁড়ে যাওয়া বিড়ম্বনায় পরে। তাই আমরা যদি বলি আমরা ছেঁড়া টাকা জুড়ে দেওয়ার ম্যাজিক জানি তবে সেই ম্যাজিক দেখতে আসবে না এমন কেউ নেই।

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2017, 07:42 PM
Updated : 5 Sept 2017, 08:12 PM

আমরা প্রথমে কড়কড়ে একটা নোট নিবো। নোটটা কম মূল্যমানের হলে ভালো হয়, এই ধরো সর্বোচ্চ দশ বা বিশ টাকার। এর চেয়ে বেশি মূল্যমানের নোট যদি সত্যিই ছিঁড়ে যায় তবে বেশ লোকসান হয়ে যাবে! এই নোটটিকে মাঝ বরাবর ভাজ দিয়ে তারপর মধ্যের দিকেই সুন্দর করে ছিঁড়ে নিবো। এরপর প্রথম ছেঁড়ার সঙ্গে লম্বালম্বি সমান্তরালে আরেকটি টুকরো করব। এরপর সেই দুই টুকরোকে মাঝামাঝি টুকরো করে মোট চার টুকরো করব। এরপর সেই টুকরোগুলো বাকি অর্ধের নোট যেটা ছেড়া হয়নি সেটার পিছনে নিয়ে খুব করে মিলানোর চেষ্টা করব। এক সময় টান দিলে দেখা যাবে ঠিক ঠিক নোটটা আস্ত হয়ে যাচ্ছে।

কী আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না তো? কোনো আঠা নেই, সেলাই নেই, স্কচটেপ নেই কীভাবে জোড়া লেগে গেলো ছেড়া টাকাটা এটা ভেবে হয়রান হচ্ছো?

সত্যিই তো এভাবে কি আর টাকা জোড়া লাগতে পারে? আর ম্যাজিক বলে কি সত্যিই কিছু আছে নাকি, সেটা তো একটা কৌশল মাত্র তাই না? তাহলে সেই কৌশলটাই জানব আমরা এবার।

আমাদের যা যা লাগবে—

১। একই আকারের, একই চেহারার দুইটি সমমানের নোট। মানে চকচকে বিশ টাকার নোট হলেই দুটিই চকচকে বিশ টাকার নোট তাও একই প্রিন্টের হতে হবে। অন্য মানের, চেহারার বা প্রিন্টের নোট হলে মোটেই চলবে না।

২। একটু কাগজ জোড়া দেওয়ার আঠা।

৩। একটি তুলি

যেভাবে করব—

১। প্রথমে নোট দুটোকে সমান করে অর্ধেক ভাজ করে নিব। প্রতিটি নোটের মধ্যে দিয়ে একটি আড়াআড়ি ভাজ থাকতে হবে।

২। এরপর যে কোনো একটি নোটের অর্ধেক অংশের তিন দিকে তুলি দিয়ে আঠা লাগাতে হবে। মানে ভাঁজের দিক বাদে কিনারার তিন প্রান্ত। এভাবে দুই নোটের মধ্যে একটা পকেট মতো জায়গা হবে। যেটা পরে আমাদের কাজে আসবে।

৩। এখন আরেকটি নোট সেই আঠায় সমান করে বসিয়ে দিতে হবে। যেন বাকি অর্ধেক অংশ তুললে নিচে একদম একই চেহারা দেখা যায়। এতটুকু প্রস্তুতি নিয়ে দর্শকের সামনে যেতে হবে

৪। শুরুতেই দর্শককে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নোট দেখাতে হবে। সেই নোটের সামনের দিক একটি নোট পিছনের দিকে আসলে অন্য নোট, কিন্তু দর্শককে সেটা বুঝতে দেওয়া যাবে না।

৫। এখন ম্যাজিক শুরু করার আগেই পিছনের নোটের অর্ধেক ভাঁজ করে সামনের নোটের অর্ধেক অংশে লুকিয়ে ফেলতে হবে।

৬। সামনের নোটের বাকি অর্ধেক অংশ এখন ইচ্ছামতো ছিঁড়তে হবে। শুধু যেটা নিশ্চিত করতে হবে, প্রথম ছেঁড়া অংশটি যেন খুব বেশি আঁকাবাঁকা না হয়। যতটা সম্ভব সোজা থাকে।

৭। এখন ছেঁড়া অংশগুলোকে মিলিয়ে দেওয়ার ছলে দুই নোটের মধ্যে থাকা পকেটে ভরে ফেলতে হবে। চেষ্টা করতে হবে সামনের অংশে মধ্যমা, অনামিকা আর কণিকা এই তিন আঙ্গুল দিয়ে একটু আড়াল তৈরি করে তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ছেঁড়া অংশগুলো ভরে ফেলতে।

৮। এরপর আস্তে আস্তে পিছনের নোটকে ইংরেজি ‘Z’ অক্ষরের মতো করে ভাঁজ করে একটু বাইরে আনতে হবে। একসময় পুরো টান দিয়ে নোটটা খুলে ফেলতে হবে তবে এক হাত দিয়ে শক্ত করে ছেড়ে নোটের ছেঁড়া অংশ আটকে ধরে রাখতে হবে যেন ছেঁড়াটা বোঝা না যায়।

৯। সামনে পিছনে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো যায় নোট আসলে একটাই বিশে করে পিছন থেকে এটা দেখালে সোজা হবে কারণ পিছনে নোট একটাই। কিন্তু সামনের দিকে দেখানোর সময় একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

১০। নিজে নিজে বাড়িতে অনেকবার অনুশীলন করলে ঠিক ঠিক এই জাদু দেখিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়া যাবে তবে সে ক্ষেত্রে বার বার টাকা না ছিঁড়ে টাকার মাপে সাধারণ কাগজ কেটে নেওয়াও ভালো হবে। নাহলে বিষয়টা অনেক খরচ সাপেক্ষ হয়ে যাবে।