তারা মাছ

সাগরে যে তারার মতো প্রাণীটা থাকে তারা আমরা বরাবরই তারামাছ নামে চিনি। কক্সবাজার, পতেঙ্গা কি কুয়াকাটা গেলে বালুকাবেলায় এমন অজস্র তারামাছ চোখে পরবে। আশেপাশের দোকানেও কিনতে পাওয়া যাবে অনেক অনেক শুকানো মৃত তারামাছ মাছ।

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2017, 12:40 PM
Updated : 15 May 2017, 12:40 PM

তবে যতই সেটাকে আমরা তারা মাছ বলে ডাকি এটা কিন্তু আসলে মাছ নয়। যেমন কোরাল বা টুনা সাগরের মাছ কারণ তাদের মেরুদণ্ড আছে। আবার একই মেরুদণ্ড থাকার পরেও তিমি মাছ নয়, কারণ তারা মাছদের মতো ডিম পারে না। তিমিরা সরাসরি সন্তান প্রসব করে এবং ছোট্ট তিমিরা মায়ের স্তন পান করে। তারামাছের বিষয়টা আরও ভিন্ন তারা মাছের মেরুদণ্ডই নেই। মেরুদণ্ডী প্রাণীদের থেকে তারামাছের বৈশিষ্ট্য অনেক আলাদা।

সাগরে অনেক রকম তারা আছে। তাদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কাঁটাযুক্ত শরীর এবং পাঁচটা বাহু। যে বাহুগুলোর কারণে আসলে ওদের তারা বা তারামাছ বলে ডাকা হয়। কিছু কিছু তারাদের তো বাহুর সংখ্যা ৫০টা পর্যন্ত হতে পারে।

তারাদের শরীরে সাঁড়শির মতো অঙ্গ থাকে আর চোষকও থাকে। এগুলোর সাহায্য প্রাণী ধীর গতিতে সাগরের তলদেশে হামাগুড়ি দেয়।

তারাদের কিন্তু কোনো চোখ থাকে না। ওদের বাহুগুলোর শীর্ষে এক ধরণের রঞ্জক পদার্থ সম্বলিত ফোঁটা দাগ থাকে যেগুলো আলোক সংবেদী হয়। এই সংবেদী ফোটার মাধ্যমে তারারা খাদ্য সন্ধান করে।

তারারা নিজেরা যতই শক্ত রুক্ষ হোক ওদের খাওয়ার জন্য প্রিয় নরম প্রাণী। তাই মলাস্কা পর্বের প্রাণী যেমন শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি ওদের খুব পছন্দের। তারাদের পেটে যে এনজাইম থাকে তা এইসব খাদ্য হজমে সহায়তা করে।

সামুদ্রিক তারারা সবধরনের জায়গায়ই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। হোক সেটা উত্তাল সমুদ্র, পাথুরে সাগর তল, জলজ উদ্ভিদপূর্ণ এলাকা, প্রবালের খাঁজ সবখানেই তারারা খুব সাবলীল। কিছু কিছু সামুদ্রিক তারা তো বালির বিশ হাজার ফুট নিচেও বাস করে অনায়াসে।

সামুদ্রিকরা একদম সামাজিক প্রাণী নয়। তবে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় খাদ্যের সন্ধানে তারারা একসঙ্গে মিলিত হয়।