রিখটার স্কেলের দিন

আজ ২৫ এপ্রিল ভূকম্পবিদ চার্লস ফ্রান্সিস রিখটারের জন্মদিন। আমরা অনেকেই ভূকম্পবিদ শব্দটার সঙ্গে পরিচিত নাহলেও ভূকম্পন বা ভূমিকম্প শব্দটি খুব শুনেছি। আর ভূমিকম্প হলেই পর পর যে কথাটা সবার মনে আসে তা হচ্ছে ভূমিকম্পটা রিখটার স্কেলে কত মাত্রার ছিল? রিখটার স্কেল, রিখটার, হুম, কোনো যোগ পাওয়া যাচ্ছে কি?

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2017, 09:03 AM
Updated : 26 April 2017, 09:03 AM

চার্লস ফ্রান্সিস রিখটার জন্মগ্রহণ করেন ১৯০০ সালে মানে গত শতকের একদম শুরুতে সেই হিসেবে আজকে উনার জন্মের পরে আজ ১১৭ বছর পার হয়ে গিয়েছে। তারপরেও আমরা কেন তাকে স্মরণ করি তাই জানবো আজকে।

ভূমিকম্প হওয়া পৃথিবীর ইতিহাসে খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। আমরা যে ভূখণ্ডে বাস করি, তার নিচে অনেকগুলো স্তর আছে। এতে নানান রকমের উপাদান রয়েছে। ধারণা করা হয় পৃথিবীর কেন্দ্রে এখনও একটি জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড রয়েছে যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল, এদিকে ভূখণ্ডগুলোও প্রতিদিন নিজেদের মধ্যে স্থান বদলায়, এক অংশ আরেক অংশের সঙ্গে মিলিত হয় আবার একজন আরেকজনকে ছেড়েও যায়। এগুলো পৃথিবীর স্বাভাবিক বিবর্তন প্রক্রিয়া। আর এই প্রক্রিয়া সংঘটন হওয়ার ফলে ভূখণ্ড কেঁপে উঠে।

ভূকম্পনের ফলে পৃথিবীর ভূখণ্ডের উপরে বাস করা জীবদের বেশ সমস্যা হয়। তাদের আবাসভূমি ভেঙ্গে পড়ে, জীবন বিপন্ন হয়। এইভাবে অনেক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এমনকি অনেক প্রাণীর অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পিছনেও এই ভূমিকম্প দায়ী।

ভূমিকম্প যেহেতু মানুষের জীবনে খুবই বড় ঘটনা, এটির সম্পর্কে গবেষণা করার প্রয়োজনীয়তাও তাই বিজ্ঞানীদের কাছে বড় হয়ে উঠে। সেই গবেষণার প্রেক্ষিতে ১৯৩৫ সালে বিজ্ঞানী চার্লস ফ্রান্সিস রিখটার গবেষণা করে এমন একটা স্কেল দিয়ে ভূকম্পনের মাত্রা মাপা যায়। সেই স্কেলের নাম রিখটার স্কেল। মনে রাখতে হবে রিখটার স্কেল কিন্তু কোনো যন্ত্র নয়। যে যন্ত্র দিয়ে ভূকম্পনের মাত্রা মাপা হয় ও রেকর্ড করা হয় তার নাম সিসমোগ্রাফ। সিসমোগ্রাফে ব্যবহৃত স্কেলের নাম রিখটার স্কেল।

রিখটার স্কেলে শূন্য থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যা রয়েছে। প্রতি এক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ভূমিকম্পের উচ্চতর যে মাত্রা প্রকাশিত হয় তা আসলে পূর্ববর্তী সংখ্যার চেয়ে ১০ গুণ বড় এবং বিধ্বংসী হয়। এর মানে হলো, যদি একটি ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ ছয় তবে সেটা ৫ মাত্রার ভূমিকম্পের চেয়ে ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী এবং তা থেকে ৩২ গুণ বেশি শক্তি নিঃসরণ করে।

আজকের দিনটাকে কীভাবে উৎযাপন করা যায় এইটাই তো বলা হয়নি। আজকে আমরা রিখটার স্কেল সম্পর্ক আরও বেশি করে জানতে পারি। এই স্কেলের মাধ্যমে কীভাবে ভূকম্পনের তীব্রতা বুঝা যায় তাও বুঝার চেষ্টা করা যেতে পারে।

ভূমিকম্প থেকে বাঁচার জন্য কী কী কাজ করা যায় সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা যায়, সম্ভব হলে একটা মহড়াও আয়োজন করে ফেলা যায় বন্ধুদের নিয়ে।

চার্লস ফ্রান্সিস রিখটারে জীবনীটা পড়া যায়। তাহলে আমরা জানতে পারব একজন বড় বিজ্ঞানী কীভাবে বেড়ে উঠেছেন।

ভূমিকম্প সম্পর্ক একটা মজার তথ্য হলো, সারা পৃথিবীতে সারাক্ষণই কোথাও না কোথাও ভূকম্পন হতে থাকে। তবে সেটা যদি রিখটার স্কেলে দুই দশমিক পাঁচের নিচে হয় তবে সেটা কেউ বুঝতেই পারে না।