সিংহ আর জিরাফ

সিংহ আর জিরাফের মধ্যের সম্পর্ক বেশ খারাপ। ঠিক সাপ নেউলের মতো না ওদের সম্পর্কটা আসলে দাঁ আর কুমড়ার মতো। এখানে দাঁ হলো সিংহ আর কুমড়া হলো বেচারা জিরাফ। এত্ত বড় আকার থাকা সত্ত্বেও সিংহের সঙ্গে সে এঁটে উঠতে পারে না।

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2017, 07:14 AM
Updated : 16 Feb 2017, 07:14 AM

মানুষের বাচ্চা জন্মের সময় কতটুকু থাকে বলতে পারবে কি? এই ধরো তিন কেজির মতো আর উচ্চতা খুব বেশি যদি হয় তাহলে আড়াই ফুট। আর জিরাফ জন্মের সময়ই থাকে ৬৮কেজি আর উচ্চতা থাকে ছয় ফুট। এর উপরে জীবনের প্রথম বছরে জিরাফ বাড়ে আরও চার ফুটের মতো। কিন্তু এত বাড়লে কী হবে জিরাফ হলো একটা নিরীহ প্রাণী। চুপ চাপ পাতা খায় নিজেদের মতো থাকে।

এদিকে সিংহ হলো পাজির পাজি আবার ভীষণ হিংস্রও। তারা সুযোগ পেলেই জিরাফদের টুটি চেপে ধরে। বিশেষ করে জিরাফরা যখন ছোট থাকে। ছোট্ট জিরাফগুলো তিড়িংবিড়িং লাফাতে থাকে সিংহ খপ করে ধরে কপ করে খেয়ে ফেলে। তাই যতদিন জিরাফরা বেশ বড়সড় না হয়ে যায় সারাদিন এই ভয়ে ভয়ে থাকে যে কখন সিংহ এসে চেপে ধরল।

বড় হয়ে গেলেও জিরাফদের শান্তি নেই। যেন না একটু গলাটা নামিয়ে পানি খেতে যায় অমনি সিংহ ঘাড়ে এসে একটা কামড় বসিয়ে জিরাফকে কুপোকাত করে ফেলে। গলা যদি নাও নামায় তাও স্বস্তি কই? সিংহরা যেমন ভালো দৌড়াতে পারে তেমনে ভালো লাফও দিতে পারে। নাগাল শুধু পেলেই হলো। তাই জিরাফরা যখন পানি খেতে ঘাড় নামায় তখন একটা দুইটা জিরাফ ঠিকই গলা উঁচু করে দাঁড়িয়ে পুরো দলকে পাহারা দেয়। যেই না সিংহের সামান্য নড়াচড়া টের পাওয়া যায় ওমনি দে দৌড়।

জিরাফদের এই বিশাল উচ্চতা জিরাফদের অনেক রকমের সুবিধা দেয়। যেমন তারা অনেক দূর পর্যন্ত দেখতে পায়। তাদের দৃষ্টিশক্তিও বেশ প্রখর। অনেক দূরের কিছু দেখতেও তাদের সমস্যা হয় না। তাই সিংহ বা অন্য যে কোনো শিকারির আগমন তারা টের পায় সবার আগে আর নিজেদের রক্ষা করে ফেলতেও পারে চট জলদি।

মজার কথা হলো অন্য তৃণভোজী প্রাণী যেমন জেব্রা, হরিণ, বুনো ষাঁড়ের মতো নিরীহ প্রাণীরাও জিরাফদের উচ্চতা থেকে সুবিধা নেয়। তারা জিরাফদের আশেপাশে দাঁড়িয়ে ঘাস খেতে থাকে। যখনই দেখে জিরাফরা কোনো কারণে সতর্ক হয়ে গিয়েছে তারাও সতর্ক হয়ে যায় আর পালিয়ে প্রাণ বাঁচায়।