সব দেশ, ভাষা, শিক্ষা এমনকি অশিক্ষিত সভ্যতার মানুষের মধ্যেও ছোটবেলা থেকেই ধাঁধাঁ শিখার বা শেখানোর একটা প্রচেষ্টা থাকে। কেননা ধাঁধাঁ আমাদের মস্তিষ্কের দুয়ারে আঘাত করে, কপাটগুলো খুলে দেয়। আমাদের গাণিতিক অথবা সাধারণ যুক্তিগুলোকে শক্তিশালী করে।
আমাদের মস্তিষ্ক যদি কোনো সমস্যার যুক্তিযুক্ত সমাধান ভাবতে পারে। এভাবে যুক্তি দিয়ে ভাবলে আমাদের দেখার, বোঝার এবং কাজ করার দক্ষতা বেড়ে যায়।
ধাঁধাঁ দিয়ে যে শুধু গাণিতিক দক্ষতা বাড়ে তা কিন্তু নয়। শব্দের ধাঁধাঁ মিলালে শব্দ বা ভাষার দক্ষতা বড়ে আবার জিগস পাজলের মতো ধাঁধার সমাধান করতে বসলে হাত ও চোখের স্নায়ুও খুব কার্যকর হয়ে উঠে। বলতে পারো এগুলো স্নায়ুদের ব্যায়াম যা স্নায়ুগুলোকে শক্তিশালী করে। ঠিক যেমন পেশির ব্যায়াম পেশিকে শক্তিশালী করে। এভাবে স্নায়ুরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার দক্ষতাও অর্জন করে।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্নায়ুর সমন্বয় করা খুব জরুরী। কেন? এরটা একটা উদাহরণ দিয়ে বলি। ধরো তুমি রাস্তা পার হচ্ছো তোমার সামনে একটা গাড়ি অনেক বেগে আসছে। তোমাকে বুঝতে হবে গাড়িটা কত জোরে আসছে। যত জোরে আসছে সেই বেগে তোমার সামনে পর্যন্ত আসতে হলে তোমাকে কত দ্রুত কোনদিকে সরে যেতে হবে। এখন যিনি গাড়ি চালাচ্ছেন তিনিও তোমার অবস্থান দেখে হিসাব করে নিবেন তুমি যে বেগে রাস্তা পার হচ্ছো সেটা তার বেগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি-না তুমি কী আসলেই রাস্তা পার হয়ে যেতে পারবে নাকি উনাকে ব্রেক কষতে হবে।
এ সব সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময় তোমাদের দুইজনেরই চোখের স্নায়ু, হাত পায়ের পেশিও চিন্তা করার স্নায়ুর সঙ্গে কাজ করবে। মস্তিষ্কের পেশি এবং স্নায়ু তখনই এই কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারবে যখন তারা শক্তিশালী এবং মসৃণ হয়।
ক্লাসে যখন শিক্ষক তোমাদের বিভিন্ন ধাঁধাঁ করতে দেন সেগুলো মন দিয়ে বুঝার চেষ্টা করবে। ভাবতে ভাবতে দেখবে সমস্যাটার গিঁট হঠাৎ খুলে গিয়েছে আর তখন যে আনন্দটা হবে সেটা একদম বিশ্ব জয় করে ফেলার মতো।
তুমি কি জানো আমেরিকাতে ২৯ জানুয়ারি মানে আজকের দিনটি পালন করা হয় ধাঁধা দিবস বা পাজল ডে হিসেবে। সেদিন সেখানে ধাঁধাঁ পছন্দ করে এমন মানুষেরা নিজেরা ধাঁধাঁর সমাধান খোজে, একে অন্যকে নতুন নতুন ধাঁধাঁ দেয়। আর কেউ কেউ তো ধাঁধাঁর সমাধান খোজা বা দল ধরে ধাঁধাঁ খেলার জন্য বাড়িতে একটা পার্টিও দিয়ে ফেলে। মজা না বিষয়টা?