পেঁয়াজ গাছেরও অন্য সব গাছের মতো শিকড় আছে, পাতা আছে, ফুল হয় আবার বীজও হয়। তবে আমরা গাছ বলতে যেমন ডাল পালা মেলা বিশাল বৃক্ষ বুঝি সব গাছ কিন্তু এমন হয় না। প্রাণীদের যেমন সবার চোখ, মুখ, পা, হাত, মাথা থাকে গাছদেরও সেরকম কিছু বিশেষ বিশেষ অঙ্গ থাকে তবে গাছ ভেদে সেটা ভিন্ন রকমের দেখতে হতে পারে।
পেঁয়াজ গাছের কাণ্ডটা অন্য গাছদের থেকে আলাদা। গাছটাও ছোট খাটো তাই তার অনেক কিছু বেশ সংক্ষিপ্তও। পেঁয়াজ গাছের কাণ্ডটা ছোট এবং গোলগাল। নিচের দিকে কিছু সরু শিকড় থাকে উপরের দিকে সরু আর গায়ে পাতলা শুষ্ক একটা আবরণ থাকে। আর ঠিক ধরেছো আমরা যে পিঁয়াজ রো দেখি ওটাই আসলে পেঁয়াজ গাছের কাণ্ড। তবে এটা রূপান্তরিত কাণ্ড। এখানে গাছটি তার সব সঞ্চিত খাবার জমিয়ে রাখে। এটাকে বাংলায় বলে কন্দ, ইংলিশে বলে বাল্ব।
বাসায় যে পেঁয়াজ বছর ব্যাপী থাকে সেটা একদম জীবন্ত একটা উদ্ভিদ। এরা শ্বাস নিচ্ছে এদের শরীরে খুব ধীরে শরীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ হচ্ছে এবং উপযুক্ত পরিবেশ দিলে এরা জেগে উঠে বংশ বিস্তারের চেষ্টাও করবে।
আমাদের আজকের পরীক্ষায় আমরা আসলে এই কাজটাই করব। একটা পেঁয়াজ যে জীবন একটা গাছ সেটাই প্রমাণ করব।
আমাদের যা যা লাগবে—
১। একটা পেঁয়াজ
২। একটা স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বা কাঁচের গ্লাস
৩। কিছু পাথর
৪। পানি
৫। সূর্যের আলো
আর অবশ্যই এটা শীতকালে হতে হবে, যখন তাপমাত্রা কম থাকে এবং দিনের দৈর্ঘ্যও কম থাকে। ছোট দিনে ঠাণ্ডায় পেয়াজের কন্দ সক্রিয় হয়ে উঠে।
যেভাবে করব—
১। একটা স্বচ্ছ গ্লাসে পাথরগুলো রাখি। পাথর গ্লাসের আধা আধি জায়গা পর্যন্ত ভরা থাকবে।
২। এরপর সেই পাথরের উপরে একটা পিঁয়াজ রাখি। এর নিচের দিকে শিকড় থাকবে সরু অংশ উপরের দিকে থাকবে।
৩। পেঁয়াজ বসানো শেষ হলে গ্লাসে একটু একটু করে পানি ঢেলে দিতে হবে। পানি যেন শিকড়ের কিছু অংশ ডুবিয়ে রাখে তবে গ্লাসের এক তৃতীয়াংশ জায়গা যেন খালি থাকে।
৪। এভাবে পানিতে ভেজানো অবস্থায় পেঁয়াজটিকে সাত থেকে দশদিন রোদ আসে এমন কোনো বারান্দায় বা জানালায় রেখে দিতে হবে। দশদিন পরে দেখা যাবে পেঁয়াজের উপরের দিক থেকে সুন্দর সবুজ লম্বা লম্বা পাতা বের হয়েছে। আর শিকড়গুলোও বড় এবং মোটা হয়েছে। এ গাছকে মাটিতে বুনে দিলে পাতার মাথায় কয়দিন পরে কলি হবে এই কলিতে ফুলও হয় আর ফুল থেকে পেঁয়াজের বীজ হয়।