আমরা যে শ্বাসের সঙ্গে অক্সিজেন নেই এই অক্সিজেন আমাদের শরীরের খাদ্যকে ভেঙ্গে শক্তি তৈরি করে যার কারণে আমরা সচল থাকি। আর এই শক্তি তৈরি করার ফলে উপজাত পদার্থ হিসেবে তৈরি হয় কার্বন ডাই অক্সাইড যেটাকে আমরা শরীর থেকে বের করে দেই। অক্সিজেন যদি জীবের শরীরে না ঢুকে তাহলে খাবার ভেঙ্গে শক্তিও হবে না আর জীব বাঁচতেও পারবে না।
তবে একেক জীবের শ্বাস নেওয়ার পদ্ধতি একেক রকমের। যেমন মানুষ বা অন্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো জটিল শ্বাসতন্ত্র পিঁপড়া বা পাখির নেই। তবে ডাঙ্গায় বাস করা প্রাণীদের শ্বাসতন্ত্র থেকে পানির তলায় থাকা প্রাণীদের শ্বাসতন্ত্র খুবই আলাদা। আলাদা হওয়ার মূল কারণ আসলে ডাঙ্গায় বাস করা প্রাণীদের শ্বাসতন্ত্র থাকে শুষ্ক। অপরদিকে পানির তলায় শ্বাসতন্ত্র তো শ্বাসতন্ত্র কোনো কিছুই না ভিজিয়ে রাখা সহজ নাওয়। তাই তাদের এমন শ্বাসতন্ত্র লাগে যা পানির ভিতরে ভেজা অবস্থাতেও দিব্যি কাজ করতে পারে। এই কারণেই মাছেদের শ্বাস নেওয়ার পদ্ধতি একটু আলাদা।
ফুলকা একটা পালকের মতো অঙ্গ যেখানে অনেক অনেক রক্ত নালি থাকে। তবে মাছ ফুলকা দিয়ে শ্বাস গ্রহণ করে না। এটা শুধু এক ধরণের ছাকনি যেটা দিয়ে পানিতে মিশে থাকা অক্সিজেনকে আলাদা করতে মাছেরা ব্যাবহার করে থাকে।
মাছ মূলত শ্বাস নেয় মুখ দিয়ে। কীভাবে? মাছ আসলে মুখ দিয়ে অনেকগুলো পানি টেনে নেয়। মাছেরও আমাদের মতো মুখের উপর নাকের মতো ছিদ্র আছে। এ সব দিয়ে মাছ পানি টেনে ভিতরে দেয়। এরপর সেই পানি ফুলকার মধ্য দিয়ে বাইরে বের করে দেয়। ফুলকা এখানে একটা ছাঁকনির মতো কাজ আকরে আর পানিতে দ্রবীভূত অস্কিজেনকে আলাদা করে ফেলে। ফুলকার মধ্যে অনেকগুলো খোলা রক্ত নালিকা থাকে আগেই বলেছি। এই রক্ত নালিকাগুলো চট করে অক্সিজেনটা টেনে রক্তে নিয়ে যায়। বের হয়ে শুধু পানি আর কার্বন ডাই অক্সাইড।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে মাছের ফুলকাটা আসলে থাকে কই? মাছের ফুলকা থাকে মাছের কানকোর নিচে। বড়রা মাছ কিনতে গেলে মাছের চোখের পরে যে অংশটা তুলে দেখেন সেটাই হল মাছের কানকো আর লাল লাল যে জায়গাটা দেখে বুঝার চেষ্টা করেন মাছটা তাজা কি-না সেটাই হল মাছের ফুলকা। ইংরেজিতে এটাকে Gill বলে।
তোমরা কি জানো বড়রা কীভাবে বুঝেন যে মাছটা তাজা কি-না। তাজা মাছের ফুলকাটায় রক্তনালীগুলো টকটকে রঙের থাকে, কিন্তু মাছ যদি দুই একদিনে আগের হয় তবে রক্ত নালিকাগুলোতে থাকা রক্ত জমাট বেঁধে যায় আর কালচে হয়ে যায়। এভাবেই বোঝা যায় মাছটা তেমন তাজা না।