পিচ্চি তিমি বেলুগা

তিমি বলতেই আমাদের মনে পরে বিশাল একটা মাছের কথা। গল্প উপন্যাসে সেই প্রাণীটির বিশালত্ব কতভাবেই না বোঝানো হয়েছে। যেমন একবার এক নাবিক সমুদ্রে হারিয়ে গেল। এরপর সে খুঁজে পেল একটা দ্বীপ। সেই দ্বীপে উঠে বেশ এলাকা জুড়ে ঘুরোঘুরি করার পরে সে বুঝতে পারলো দ্বীপটা বেশ নড়াচড়া করে। একসময় দ্বীপটা পুরো ভেসে উঠায় নাবিক বুঝতে পারলেন এটা দ্বীপ নয়। এটা একটা তিমি মাছ!

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2016, 10:42 AM
Updated : 27 Nov 2016, 10:42 AM

তিমি মাছের সবচেয়ে বড় প্রজাতিটার নাম হল, নীল তিমি। এটি শুধু তিমি মাছের না সারা পৃথিবীরই সবচেয়ে বড় আকারের প্রাণী। এগুলো লম্বায় প্রায় ৩০ মিটার মানে ৯৮ ফুট পর্যন্ত হয় আর এদের ওজন ১৭৩ মেট্রিক টন পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই হিসাবে বেলুগা তিমি একদম পুঁটি মাছ। তাই বলে আবার ভেবো না সত্যিই পুঁটি মাছ, বেলুগা তিমির ওজন হয় ১৬শ কেজির মতো। ১০০০ কেজিতে এক মেট্রিক টন হয়। মানে মেট্রিক টনের হিসেবে বেলুগার ওজন মাত্র এক দশমিক ছয় মেট্রিকটন। তবে একজন মানুষের সঙ্গে তুলনা করলে বেলুগা তিমিও বেশ বড় কারণ মানুষের সাধারণ ওজন বড়জোর ৭০-৮০ কেজি হয়। বিশাল মোটা মানুষও দেড়শ কেজির উপরে হয় না। বেলুগা তিমিরা লম্বায় হয় ১৮ ফুটের মতো। অর্থাৎ একজন তিন ফুট মানুষের তিনগুণ বেশি।

শুধু আকার নয়, বেলুগা তিমির আরও কিছু অনন্য বিষয় আছে। যেমন বেলুগা তিমির রঙ হয় সাদা। আর ওর মাথাটাও কেমন সামনের দিকে উঁচু। তাই সবার মধ্যে ওদের আলাদা করে চিনে নিতে মোটেই বেগ পেতে হয় না।

অন্য সব তিমির মতো বেলুগাদেরও ঘাড় খুব নমনীয়। চাইলেই তারা মাথা ঝাঁকাতে পারে, আবার এদিক সেদিক তাকাতেও পারে।

বেলুগারা সামাজিক প্রাণী। তারা ছোট ছোট দল করে একসঙ্গে বাস করে। ওদের এক একটা দলের নাম হল ‘পড’। এরা যে শুধু একসঙ্গে থাকে তাই নয় এরা নিজেদের মধ্যে কথা বার্তাও বলে, যেমন শিস দিয়ে, ঝনঝন শব্দ করে তারা ভাব বিনিময় করে।

বেলুগারা মাছ, খোলসওয়ালা প্রাণী, কৃমি সবই খায়।

বেলুগাদের বসবাস উত্তর মেরুর মহাসাগরীয় অঞ্চলে। এভাবেই এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি তার ৩৫-৪০ বছরের লম্বা জীবন কাটিয়ে ফেলতে পারে অনায়াসেই।