নিজের অনন্য প্রতিভা উদযাপনের দিন

প্রাচীন গ্রিস একটা দারুণ জায়গা ছিল। বলা হয়, আধুনিক যে জ্ঞান-বিজ্ঞান-সভ্যতার যে ধারা আমরা বহন করছি সব কিছুর শুরু প্রাচীন গ্রিস থেকে। সে যুগেই গ্রিসের মানুষেরা প্রযুক্তির ব্যবহার জানতেন। আর সেখানে যারা অন্যদের থেকে বুদ্ধিমান ছিল তাদের সবার খুব খাতির করত।

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2016, 10:27 AM
Updated : 25 Nov 2016, 10:07 AM
এখনকার যুগে আমরা আমাদের ওজন কীভাবে মাপি? মেশিনে দাঁড়িয়ে, তাই না? প্রাচীন গ্রিসে মানুষের ওজন মাপা হতো তার প্রতিভা দিয়ে। ধরো, তোমার একটি প্রতিভা আছে তুমি গান গাইতে পারো। প্রাচীন গ্রিসের নিয়ম অনুযায়ী তোমার ওজন হচ্ছে, ৫৫ পাউন্ড বা ২৫ কিলোগ্রাম রূপার ওজনের সমান। এখন যদি তুমি অংকেও খুব পটু হও এর মানে দাঁড়ায় দুইটি প্রতিভা মিলে তোমার ওজন হবে, ৫৫+৫৫=১১০ পাউন্ড বা ২৫+২৫=৫০ কিলোগ্রাম রূপার ওজনের সমান।

শুধু গ্রিসে নয়, প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা থাকে। তোমরা হয়তো এমন মানুষ দেখেছো যিনি পাতার বাঁশি বাজাতে পারেন। কেউ হয়তো তার পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে সুন্দর সুন্দর ভাস্কর্যই বানিয়ে ফেলেন। কেউ হয়তো চোখের নিমিষে অংক করে ফেলেন, কেউ এত সুন্দর কবিতা লিখেন যে মুগধ না হয়ে থাকা যায় না।

একদম সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষের মধ্যে এই ধরণের অনন্য গুণ ছিল। এ গুণগুলো তখন খুব জরুরী ছিল। ধরো কেউ একজন খুব ভালো পশু ধরতে পারত, সবাই দিব্যি পশুর মাংস খেয়ে বেঁচে থাকত। এদের মধ্যে একজন হয়তো পশুকে বেশ বশও করতে পারত, এভাবে শিকার থেকে মানুষ পশু পালনের দিকে আসতে পারল।

পৃথিবীকে সচল রাখার জন্য প্রতিটা মানুষের মধ্যে কিছু অনন্য গুণ থাকা প্রয়োজন। এই গুণগুলো পৃথিবীর ইতিহাসে এবং সভ্যতায় নতুন কিছু মাত্র যোগ করে যা পৃথিবীকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই প্রাচীন গ্রিসের মতো একদম বস্তুগত জিনিস দিয়ে দাম নির্ধারণ করা না হলেও এইসব গুণের কদর অনেক বেশি।

এমন অদ্ভুত অদ্ভুত প্রতিভা এবং শখ নিয়ে সারা পৃথিবীর মানুষ নানা ধরণের প্রতিযোগিতা করে থাকেন। সেগুলো যেমন উপভোগ্য তেমনি খুব কাজেও আসে। মানুষের ভিতরে থাকা এই অদ্ভুত অনন্য প্রতিভাগুলোকে তুলে আনতে তাই নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পালন করা হয় “Celebrate Your Unique Talent Day” হিসেবে। কে কবে এই দিন উৎযাপন শুরু করেছিল তা জানা যায়নি তবে সবার মধ্যে তেমন জনপ্রিয় না হলেও পৃথিবীর অনেকগুলো দেশ এই দিনটি পালন করে।

কৃতজ্ঞতা: মোহনা খন্দকার মিতি

এই দিনটা পালন করতে অবশ্য বেশি কিছু লাগে না। তেমন ঝামেলাও নাই। অনেক মানুষের একসাথে যোগ দেওয়ারও বিষয় নেই। নিজে নিজের অনন্য গুণটা খুঁজে বের করে ফেলা যায়। তারপর সেটা চর্চা করা যায়। আর শুধু চর্চা করলেই হবে না, ফেইসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে তা প্রকাশও করতে হবে। যেন এই প্রতিভাটা সম্পর্কে সবাই জানতে পারে।

রবীন্দ্রনাথের কথাই ধরো, তিনি তো গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখে, সুর করা, গাওয়া, অভিনয় করা ইত্যাদি পারতেনই। তিনি খুব ভালো ছবিও আঁকতে পারতেন। মাঝে মাঝে কবিতা লেখার মাঝে যে লাইনের কাটাকুটি হতো সেগুলো জোড়া দিয়ে চমৎকার একটা ছবি এঁকে ফেলতে পারতেন। কী দারুণ বিষয় তাই নাই?