মিষ্টি প্রাণী কোয়ালা

কোয়ালা প্রাণীটাকে তোমরা হয়তো অনেকেই চিনো না। আর চিনবেই বা কীভাবে? কোয়ালা সারা পৃথিবীতে বাস করে শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাঞ্চলে। খুব কম এলাকায় থাকে বলে সমগ্র অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে কোয়ালাদের খুব ভালোবাসার সঙ্গে রাখা হয়।

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2016, 09:15 AM
Updated : 26 Oct 2016, 09:15 AM

কম জায়গায় পাওয়া যায় বলেই শুধু নয়। কোয়ালা দেখতে খুব মিষ্টি, একদম ছোট একটা ভাল্লুকের মতো। তবে কোয়ালা কিন্তু ভাল্লুক না। কোয়ালার সঙ্গে শারীরিক গঠনে বরং ক্যাঙ্গারুর সঙ্গে বয়ে মিল আছে। তারা ক্যাঙ্গারুর মতো দেখতে নয় তবে কোয়ালাও ক্যাঙ্গারুর মতো বাচ্চাকে পেটের মধ্যে একটা আলাদা থলেতে বহন করে। এই থলেতেই মায়ের পেটে বাচ্চাটা বড় হয়।

একটা কোয়ালা একবারে একটা মাত্র 'জোয়ি'কে বহন করতে পারে। ওহ 'জোয়ি' কে তা জানো কী? কোয়ালার থলের মধ্যে যখন বাচ্চা থাকে সেই বাচ্চাটাকে 'জোয়ি' বলে। এ বিশেষ নামের কারণ হল, কোয়ালার বাচ্চা জন্মের পরে একদম জেলি বিনের মতো দেখতে হয়। তারা তখন চোখে দেখে না, ওদের তখন কানও থাকে না। এইভাবেই তারা মায়ের পেট থেকে বের হয়।

মানব শিশুরা মায়ের পেট থেকে বের হয়ে মায়ের কোলে আসে। কোয়ালার বাবুরা কিন্তু মায়ের পেট থেকে বের হয়ে এক অর্থে পেটেই থাকে। কোয়ালার পেটে যেই থলেটা থাকে সেই থলেতেই আরও কিছুদিন সময় তাকে কাটাতে হয়। 

মায়ের থলের মধ্যে 'জোয়ি'রা সাত মাস কাটায়। জন্মের পরে যখন তারা প্রথম মায়ের থলেতে আসে তখন তাদের শুধু ঘ্রাণশক্তি আর স্পর্শশক্তি থাকে। বাকি সবকিছুর গঠন হয় এই সাত মাসে মায়ের থলের ভিতরে।

থলের মধ্যে বাচ্চাগুলো যখন ছয় মাস পার করে তখন তাদের মায়ের ‘পাপ’ (pap) নামে একটি বিশেষ পদার্থ তৈরি করে। এই পদার্থটি 'জোয়ি'দের দুধের সঙ্গে মিলিয়ে খাওয়ানো হয়। এটার কারণও খুব মজার। এই পাপ নামে পদার্থটি আসলে 'জোয়ি'দের কোনো পুষ্টি দেয় না। বরং মায়েদের পেটের অন্ত্রে অবস্থিত কিছু ব্যাকটেরিয়াকে 'জোয়ি'দের অন্ত্রে দিয়ে দেওয়া হয়। এত হয় কি, 'জোয়ি'রা স্বাভাবিক বড়দের খাবার যেমন, ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা খেলে হজম করতে পারে। 

সাত মাস বয়স হলে 'জোয়ি'রা মায়ের হলে থেকে বের হয়ে হয়ে ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা খায়। তবে খাওয়া দাওয়া শেষে টুপ করে আবার মায়ের থলেতে ঢুকে যায় এবং সেখানে বসে মায়ের দুধ পান করে। এইভাবে একটা জোয়ির বয়স যখন এক বছরে এসে পৌছায়, জোয়িরা মায়ের দুধ পান করা বন্ধ করে দেয় আর শুধু পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে।

কোয়ালারা দেখতে বেশ ছোটখাটোই হয়। প্রাপ্ত বয়সে ২০ পাউন্ডের মতো ওজন হয়। দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। আর এভাবে পাতা খেয়ে একটা কোয়ালা বেঁচে থাকে প্রায় ২০ বছর।