আগুন উড়ানোর ম্যাজিক

আজ আমরা ছোট্ট একটা ম্যাজিক করব। এক টুকরো আগুনকে সাই করে উপরে উড়িয়ে দিব। কেউ কেউ এই ম্যাজিকটাকে টি ব্যাগ রকেট বলে, কেউ কেউ শুধুই রকেট বলে। তাহলে চলো দেখে নেই কীভাবে করা যায় ম্যাজিকটি।

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2016, 07:29 AM
Updated : 14 Oct 2016, 07:29 AM

যা যা লাগবে—

১। একটা চা পাতার থলে বা টি ব্যাগ

২। আগুন ধরানোর জন্য লাইটার

৩। কাঁচি

৪। কাঁচের প্লেট

সাবধানতা

১। সাথে অবশ্যই বড় কেউ থাকতে হবে, যিনি বিপদে পড়লে উদ্ধার করতে পারবেন।

২। আশেপাশে সহজে আগুন লেগে যায় এমন কোনো জিনিস যেমন কাগজ, কাপড় ইত্যাদি যেন না থাকে।

৩। সাবধানতার জন্য বালি এবং পানি সাথে রাখতে পারো।       

যেভাবে করবো—

১। টি ব্যাগের উপরের দিকে যেখানে সুতা থাকে সেই অংশ আড়াআড়ি কেটে ফেতে হবে। এরপর ভিতর থেকে চা পাতা বের করে, কাগজটার ভাজ খুলে দিলে সিলিন্ডার আকৃতির একটা কাগজ পাওয়া যাবে।

২। এই সিলিন্ডার আকৃতির কাগজটাকে কাঁচের প্লেটের উপর দাঁড় করিয়ে উপরে আগুন লাগিয়ে দিতে হবে। এ কাজটা খুব সাবধানে করতে হবে এবং সামনে বড় কেন যেন অবশ্যই থাকে।

৩। আগুন লেগে গেল দেখা যাবে প্রথম কাগজটা উপর থেকে নিচের দিকে পুড়ছে। পুড়তে পুড়তে কাগজটা যখন শেষের দিকে চলে আসবে তখন হঠাৎ আগুনটা উপরের দিকে উড়ে যাবে। কিছুটা উপরে উঠেই আগুন নিভে। কারণ কাগজটুকু পুড়ে গেলে আগুন আর জ্বলার মত কিছু পাবে না।

কেন এটা হল?

বাতাসের ঘনত্ব, তাপ এবং ওজনের একটা সম্পর্ক আছে।

যখন একই সমান ওজনের কোনো বস্তুর ঘনত্ব কম থাকে তখন সেটার ওজন কম মনে হয়। কীভাবে? বিষয়টা একটু জটিল। ধরো একটা লোহার টুকরা পানিতে দেওয়া হল সেটা টুপ করে ডুবে যাবে। কিন্তু যদি সেই টুকরাটাকেই পিটিয়ে চ্যাপ্টা করে বড় একটা পাত বানানো হয় এরপর সমপরিমাণ পানিতে ফেলা হয়, তবে দেখা যাবে সেটা পানিতে ভেসে আছে। এর কারণ হচ্ছে এখানে লোহার অণুগুলো দূরে দূরে আছে। এবং এ অবস্থায় তারা আসলে বেশি পরিমাণ পানির অণুর উপর বল প্রয়োগ করে। পানিও উল্টো বল দেয় আর পাতটা ভেসে থাকে।

তাহলে এই কথা থেকে আমরা যেটা বুঝতে পারি তা হল, কোনো পদার্থের যখন ঘনত্ব কমে যায় সেটা হালকা হয়ে যায়।

এখন তাপ দিলে যেটা হয়, পদার্থের অণুগুলো একটু নড়বড়ে হয়ে যায়। নিজেদের মধ্যে চলাচল করতে গিয়ে তাদের বাঁধন একটু আলাদা হয়ে যায় আর তারা দূরে দূরে চলে যায়। মানে ওদের ঘনত্ব কমে যায়। ঘনত্ব কমে গেলে বস্তু হালকা হয়ে যায় এটা তো আমরা আগেই জেনে নিয়েছি।

আমাদের পরীক্ষায় আমরা যখন কাগজ পুড়ালাম তখন এমনিতেই কাগজ কমে যাওয়ার কারণে তা হালকা হয়ে গিয়েছে। এদিকে আগুন কাগজের চারিদিকে একটা গরম বাতাসও তৈরি করল। গরম বাতাস হালকা ফলে সে উপরের দিকে উড়া শুরু করল। সাথে করে নিয়ে উড়লো পলকা কাগজটা। আগুন আমরা ততক্ষণই দেখতে পাবো যতক্ষণ আসলে কাগজ ছিল। কাগজ সবটুকু ছাই হয়ে যাওয়ার পরে আগুন গেল নিচে। কারণ আগুন জ্বলার জন্যও একটা মাধ্যম লাগবে।

মজার না ম্যাজিকটা?