ফ্যান্টাস্টিক মিস্টার ফক্স

তোমরা কি রোয়াল ডালকে চিনো? বলা হয়, তিনি বিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ গল্প কথক। তাঁর মতো করে গল্প নাকি কেউই বলতে পারে না। এটা বলার কারণ তোমরা বুঝবে যদি রোয়াল ডালের গল্পগুলো পড়ো। যেমন, গৃহস্থের মুরগি শিয়াল নিয়ে গিয়েছে আর গৃহস্থ শিয়ালকে ধরে শাস্তি দিয়েছে এই ধরণের গল্প তো আমরা প্রায়ই শুনি। কিন্তু শিয়ালটা কী ভাবে এটা কি কোনোদিন কেউ ভেবেছে?

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2016, 06:34 PM
Updated : 9 Oct 2016, 06:34 PM

শিয়ালেরও যে কিছু কথা ছিল, তারও যে গৃহস্থের উপর রাগ ছিল, গৃহস্থকে জব্দ করতে তারও যে কিছু পরিকল্পনা ছিল এ কথা আর কে বলবে রোয়াল ডাল ছাড়া? এর এর জন্যই তো তিনি অসাধারণ গল্প কথক।

আমাদের এই ফ্যান্টাস্টিক মিস্টার ফক্স নামের বইটির নায়ক কোনো মানুষ নয়। নায়ক হল একটি শিয়াল। নাম তাঁর, মিস্টার ফক্স। উহু শুধু মিস্টার ফক্স বলে তাঁর বুদ্ধির বর্ণনা করা সম্ভব নয়। তাই তাঁর নাম লেখক দিয়েছেন ফ্যান্টাস্টিক মিস্টার ফক্স। ফক্স থাকে একটা গাছের নিচে পাতালে। তাঁর সাথে থাকে তাঁর বৌ মিসেস ফক্স আর চারটা বাচ্চাও।

এত সুন্দর পরিবারটিকে বেঁচে থাকতে হয় মানুষের বাড়িতে হানা দিয়ে দিয়ে। কারণ তা না হলে এরা খাবার পাবে কই? মিস্টার ফক্সের বাসার কাছেই বাস করে তিনজন গৃহস্থ বোগিস, বাউন্স এবং বিনস। তিনজনই খুব নিষ্টুর, দুষ্টু এবং খানিকটা বোকাও। মানে মিস্টার ফক্সের অন্তত তাই মনে হয়। মিস্টার ফক্স তাদের খামারে হানা দিয়ে নিয়মিত পশু-পাখি শিকার করে দিব্যি হেসে-খেলে দিন পার করছিল।

কিন্তু মিস্টার ফক্সের এই সুখ গৃহস্থদের ভালো লাগবে কেন বল? ওরাও তো এইগুলোর উপরই জীবন ধারণ করে। তাই তিনজন মিলে ফন্দি আঁটে মিস্টার ফক্সকে আচ্ছা মতো শিক্ষা দিতে হবে।

শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনজনে বেশ পরিশ্রমও শুরু করে। প্রথমেই কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে মিস্টার ফক্সের পাতালের বাড়িটা খুঁজে বের করে। মিস্টার ফক্স কোনো ক্রমে মাটির আরও ভিতরে ঢুকে জীবন বাঁচায়। গৃহস্থরাও বুঝে শেয়াল ব্যাটা আর যাবে কোথায়? ক্ষুধা লাগলে এই পথেই বের হয়ে আসবে। তাই তারা সুরঙ্গের মুখেই বসে পাহারা দিতে থাকে।

এরকম পাহারায় পড়ে মিস্টার ফক্স শুরুতে একটু ঘাবড়ে যায় ঠিকই। প্রথম প্রথম একটু কষ্টও হয়। তাই বলে কি মিস্টার ফক্স দমে যাবে? কক্ষনও না। সে আরও দারুণ ফন্দি আঁটে। বুদ্ধি খাটিয়ে মাটির ভিতর দিয়ে সুরঙ্গ কেটে সোজা গৃহস্থদের খামারে গিয়ে ঢুকে।

মিস্টার ফক্স আর তিন কৃষকের এই মজার কিন্তু জীবনমুখী যুদ্ধ কে জয়ী হয় আর কে কার বুদ্ধির কাছে হেরে যায় তা জানতে হলে পড়তে হবে ফ্যান্টাস্টিক মিস্টার ফক্স।

রোয়াল ডাল  ১৯৭০ সালে ফ্যান্টাস্টিক মিস্টার ফক্স বইটি লিখেন। রোয়াল্ড ডালের অন্য সব বইয়ের মতোই এটা খুবই জনপ্রিয়তা পায়। সেই জনপ্রিয়তার কারণেই ২০০৯ সালে ওয়েস অ্যান্ডারসন বইটিকে সিনেমায় রূপান্তর করেন। এ ছাড়াও স্টেজে এবং অপেরায়ও এই গল্পটা ব্যবহার করা হয়েছে।