হাও টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন-টু

আচ্ছা, তোমাদের বার্ক গ্রামের ভাইকিংসদের কথা মনে আছে কি? সেই যে, ড্রাগনের পিঠে চড়ে হিকাপ নামের ছেলেটার উড়ে বেড়ানোর কথা?

>>নাজিয়া প্রভাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2015, 08:40 AM
Updated : 5 Oct 2016, 08:00 PM

তাদের নিয়ে তৈরি অ্যানিমেটেড সিনেমা, হাও টু ট্রেইন ইওর ড্রাগনের কথা?  কী দারুণ করে হিকাপ ভয়ংকর ড্রাগনদের পোষ মানিয়েছিলো! তোমরা যারা সিনেমাটি দেখোনি বা অনেক আগে দেখেছো কিন্তু ভুলে গিয়েছো, চলো আগে পরিচিত হয়ে নেই হিকাপের ড্রাগনময় দুনিয়ার সঙ্গে--

বার্ক নামের গ্রামটিতে ভাইকিংসদের বসবাস।  কিন্তু বার্ক হচ্ছে ড্রাগনদের ভূমি, সেখানে মানুষ বাস করে ড্রাগনদের সঙ্গে লড়াই করে।  তাই সেখানে ভাইকিংসদের প্রধান কাজ হলো ড্রাগন মারা। সর্দার স্টোয়িক এর ছেলে হিকাপ। বাবা চায় ছেলেও তার মতোন ভাইকিং হয়ে ড্রাগন মারার কাজ করুক। কিন্তু হিকাপ মন থেকে একজন ভাইকিংস নয়। সে কিছুটা প্রকৌশলী চিন্তা নিয়ে ঘুরে। তাই সে তৈরি করলো এক ফাঁদ, যা দিয়ে ড্রাগন না মেরে ধরা যাবে। একদিন তার ফাঁদে আহত অবস্থায় ধরা পরে এক ড্রাগন। সেটি আবার যেই সেই ড্রাগন নয়,ভয়ানক ড্রাগন ‘নাইট ফিউরি’। আহত নাইট ফিউরিটির সঙ্গে হিকাপের বন্ধুত্ব হয় সহজেই। হিকাপ ওর নাম দেয় টুথলেস। ওর সঙ্গে থেকে হিকাপ বুঝতে পারে ড্রাগন অন্য সকল প্রাণীর মতোই নিরীহ, তারা নিছক খাদ্য এবং জীবন ধারণের জন্য মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। অনেক বাধা-বিপত্তি উৎরে হিকাপ গ্রামের সকলকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে, তারা ড্রাগনদের মেরে ভুল করছে। এরপরে মানুষ ও ড্রাগনদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রতিটি মানুষ একটি সঙ্গী ড্রাগন রাখা শুরু করে। কিন্তু সেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে হিকাপ হারায় তার একটি পা।

গত বছর এই সিনেমাটির ২য় পর্বও বের হয়েছে। গত পাঁচ বছর ধরে বার্ক গ্রামে ড্রাগন ও মানুষ বেশ সুখে শান্তিতে বাস করছে। হিকাপ এর বয়সও এখন কুড়ি। বর্তমানে গ্রামের জনপ্রিয় খেলা হলো ড্রাগন রেস। হিকাপের বন্ধুরা এই খেলায় খুবই পারদর্শী। হিকাপের বাবা স্টোয়িক চান যে হিকাপ এবার গ্রামের দায়িত্ব নিক,কিন্তু হিকাপ তাতে রাজি না। হিকাপ এর মূল আকর্ষণ টুথলেস এর পিঠে চড়ে নানা অজানার সন্ধানে অভিযানে বের হওয়া। এমনি এক অভিযানে বের হয়ে হিকাপ দেখতে পায় কিছু বিধ্বস্ত গ্রাম। গ্রামের লোকেরা জানায় কোনো এক অজানা ড্রাগন-আরোহী এ কাজ করে গিয়েছে। ওরা তো হিকাপদেরই সন্দেহ করে বসে। কিন্তু হিকাপ বুঝতে পারে ওদের ছাড়াও এমন কোনো জনপদ আছে যারা ড্রাগন পুষে এবং তাদের এইসব খারাপ কাজে ব্যবহার করে। সেই অজানা ড্রাগন রাইডারকে খুঁজতে গিয়েই হিকাপ অপহৃত হয়। শীতল এক গুহায় গিয়ে হিকাপ খুঁজে পায় নিজের জীবনের অজানা সম্পর্ক। সেই গুহাতে হিকাপ আরও দেখা পায় শত শত নতুন ড্রাগনের এবং সকল ড্রাগনের রাজা ড্রাগন আলফার।

হিকাপকে অপহরণ করা ড্রাগন রাইডার হিকাপের মতোই একজন মানুষ। সেও ড্রাগনকে ভালোবাসে, ড্রাগনকে বশে আনতে পারে। তাহলে কে সেই হীন উদ্দেশ্যের ড্রাগন রাইডার? যে ধ্বংস করে দিচ্ছে জনপদের পরে জনপদ? এখানে বলে রাখি, যেই ড্রাগন রাইডার হিকাপকে অপহরণ করেছিলো সে কিন্তু হিকাপের একজন হারিয়ে যাওয়া আপনজন। তার সংগ্রহে আছে হাজার হাজার ড্রাগন। তিনি এইসব ড্রাগনদের যত্ন করে তাদের রক্ষা করে, ড্রাগনদের জন্য একটি নিরাপদ পৃথিবী তৈরি করার চেষ্টা করে।

কিন্তু রহস্য থেকেই যায় সেই জমে যাওয়া অঞ্চল ও আহত ড্রাগনদের নিয়ে। কে করছে এসব? তখন দেখা পাওয়া যায় ড্র্যাগো ব্লাডভিস্ট নামের একজন ও তার দলের সঙ্গে। ড্র্যাগো খুবই যুদ্ধবাজ একগুঁয়ে ভাইকিং। সকল ড্রাগনকে বশে এনে তাদের দিয়ে ধ্বংস ও যুদ্ধ করানোটাই তার মূল উদ্দেশ্য। হিকাপ, তার পরিবার, তার বন্ধুরা সকলে মিলেও ড্রাগোকে বোঝাতে পারে না, তাই তাদের নামতে হয় ড্র্যাগোর বিরুদ্ধে যুদ্ধে।

সেই যুদ্ধে কে জিতবে, হিকাপকে আর কী কী হারাতে হবে, হিকাপ কি পারবে সকল ড্রাগনদের মুক্ত করতে? এই সবকিছু  জানতেই দেখতে হবে ‘ড্রিম ওয়ার্কস’ প্রোডাকশনের ‘হাও টু ট্রেইন ইওর ড্রাগন-২’ অ্যানিমেশন সিনেমাটি। ২০১৮ সালে এই সিনেমাটার ৩য় সিকুয়েল বের হবে। ততদিন পর্যন্ত মোহিত থাকো ড্রাগন আর হিকাপের জাদুকরী পৃথিবীতে।