একটা আইফোনের আকারই তো এত বড়। তবে, প্রজাপতি ঠিক না হলেও প্রজাপতির কাছাকাছি এরকম একটা কিছু কিন্তু আছে! তোমাদেরকে যার কথা বলছি একে বলা হয় মথ। এরা কীটপতঙ্গদের সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী ‘লেপিডোপ্টেরা’ থেকেই এসেছে, কেবল তাদের পরিবারটা ভিন্ন।
অবাক করা বিষয় হলো, লেপিডোপ্টেরাদের মোট দুই লক্ষ প্রজাতির মধ্যে মাত্র ১০ ভাগ প্রজাপতি বাদে আর বাকি সবই কিন্তু মথ! প্রসঙ্গ যখন আসলোই চলো আগে আমরা প্রজাপতি আর মথদের আলাদা করার পদ্ধতি জেনে নেই। তোমরা কিছু প্রজাপতি দেখবে ডানাটা ভাজ করে বসে আছে। আর কিছু ডানাটা মেলে। যারা ডানা ভাজ করে রাখে এরা প্রজাপতি আর যারা ডানা মেলা রাখে এরা মথ।
মথদের জগতে সবচেয়ে মাদার নাম, বড় লুনা মথ। এদের বাড়ি উত্তর আমেরিকায়। লুনা মথের প্রজাতি সংখ্যাও অসংখ্য। চলো আজ তাহলে ঝটপট করে জেনে নেই লুনা মথ সম্পর্কে কিছু অজানা কথা।
তবে প্রজাপতি ও মথের জীবনচক্রের ধাপগুলো একই, ডিম, শুঁয়োপোকা, পিউপা, এবং ইমাগো বা পূর্ণাঙ্গ কীট। এদের শুঁয়োপোকার গঠন পূর্ণাঙ্গ মথ বা প্রজাপতির গঠনের চাইতে সম্পূর্ণ আলাদা। বেড়ে উঠার সঙ্গেসঙ্গেএসব শুঁয়োপোকার চেহারার পরিবর্তন ঘটে এবং ক্রমশ কয়েকটি অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়। পরিপক্ব হয়ে গেলে শুঁয়োপোকা পিউপাতে বিকশিত হয় যাকে প্রজাপতির ক্ষেত্রে ক্রিসালিস এবং মথের ক্ষেত্রে কোকেন বলে ডাকা হয়।
শুঁয়োপোকাগুলো বড় হওয়ার সময় কয়েকবার খোলস বদলায়। ৩/৪ সপ্তাহের মধ্যে ৫ বার এরা খোলস বদলায়। খোলস পরিত্যাগ করে শুঁয়োপোকার পরিণত হওয়ার এক একটা অবস্থাকে ইনস্টার বলা হয়।
শেষবারের মতো খোলস ছাড়ার পর, মাস খানেক পর যখন এগুলো পুরো গাছ ছেয়ে ফেলে তখন প্রায় ২ ইঞ্চি লম্বা এই শুঁয়োপোকাগুলো রেশম সুতার গুঁটি তৈরি করে। লুনা মথরা ২/৩ মাস নিজেদেরকে এভাবে এতে মুড়িয়ে রাখে।
লুনা মথের যেহেতু খাওয়া দাওয়ার ঝামেলা নেই তাই একটু বড় হলেই এরা সঙ্গী খুঁজতে বেরিয়ে পরে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, পরিণত হওয়ার পর সব মিলে তারা সপ্তাহখানেক বেশি বাঁচে না। গভীর রাতে লুনা মথের গোলাপি রেখা টানা পাখার পিঠে চোখের মনির মতো সাদা স্বচ্ছ বিন্দুগুলো দেখে মনে হতে পারে এদের পাখায় বুঝি শিশির কণা লেগে আছে! ক্ষণজন্মা লুনা মথের নান্দনিকতারও কিন্তু অন্ত নেই!