পার্কের সীমানা প্রাচীর ভেঙে তোলা দোকানপাট, পার্কের ভেতরে গড়ে ওঠা সরকার সমর্থক কয়েকটি সংগঠনের কার্যালয়, ভ্যানে ফলের মজুদ, আবর্জনা- সবই আছে আগের মতো।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, স্থাপনা সরিয়ে নিতে সিটি করপোরেশন থেকে কোনো নির্দেশনা এখনো তারা পাননি। সেটি পেলেই তারা স্থাপনা সরিয়ে নেবেন।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা আনসার আলী খান বলেছেন, দুই মাস আগে তিনি মৌখিক নির্দেশনা দিলেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি।
গত ১ জুলাই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ‘যাত্রাবাড়ীর অতি জরুরি পার্কটি এখন ভাগাড়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
পার্কের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের আধপাকা ঘর; আরেক প্রান্তে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের অফিস ও কয়েকটি চায়ের দোকান। ৪৮ নম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ও ওই পার্কের মধ্যে।
সোমবার পার্কে গিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের বাইরে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বসে থাকতে দেখা যায়। কার্যালয়ের ভেতরে প্রতিবেদকের সঙ্গে পরিচয় হয় ইসমাইল হোসেন উজ্জ্বল ও ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে, যারা নিজেদের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন।
উজ্জ্বল বলেন, “১৯৮৮ সালের দিকে পার্কটি তৈরির সময় অনেক বড় ছিল। খেলার জায়গা ছিল, বেঞ্চ ছিল, ফুলের গাছ ছিল…খুব সুন্দর পরিবেশ ছিল। ছোটবেলায় আমরা নিজেরা এই পার্কে খেলতে আসতাম। পার্কের পরিবেশ দেখলে মানুষ অবাক হয়ে যেত।
“সে সময় উত্তর যাত্রাবাড়ী, বিবির বাগিচা, কলার আড়ৎ, নতুন পাড়া এলাকার মানুষের প্রধান বিনোদন ও সকাল-বিকাল বেড়ানোর জায়গা ছিল পার্কটি।”
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে পার্ক দখলের প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে উজ্জ্বলের অভিযোগ।
পার্কের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নিজেরা উদ্যোগ নিলেও তাতে কাজ হয়নি বলে জানান উজ্জ্বল।
“আমরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাননীয় এমপি সাহেবকে এ বিষয়ে বলেছি, কাজ হয়নি। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে খোকন ভাই (মেয়র সাঈদ খোকন) জনসংযোগের জন্য প্রায় ৫-৬ বার এই এলাকায় এসেছিলেন। তাকেও এই বিষয়ে আমি নিজে একাধিকবার বলেছি।
“এলাকার বাসিন্দা হিসেবে আমরা চাই এই পার্কটির সংস্কার হোক। অফিস স্থানান্তর কোনো ব্যাপার না, ডিসিসির নির্দেশনা এলেই আমরা অফিস স্থানান্তর করব। ডিসিসির কোনো নির্দেশনা এসেছে, এমন তথ্য আমাদের জানা নেই।”
অবশ্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (দক্ষিণ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনাসার আলী খান বলেন, “আমি নিজে গত দুই মাস আগে সেখানে গেছি। মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছিলাম, অফিস যেন না থাকে। সুতরাং নির্দেশনা দেয়া হয়নি– এ কথা ঠিক নয়।”
রোজার পর ঢাকা দক্ষিণের পার্কগুলো থেকে একে একে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।