সাতরাস্তার মোড় থেকে বিজয় সরণী সংযোগ সড়কের দিকে মূল সড়কের সমান্তরালে হাতিরঝিল প্রকল্প লাগোয়া এলাকাটিই বেগুনবাড়ি হিসাবে পরিচিত। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন আবাসিক ভবনের পাশাপাশি এ এলাকার ‘বটতলা বাজার’ অনেকদিনের পুরনো।
এ বাজারটি কেন্দ্র করেই এলাকাবাসীর ভোগান্তির শুরু কয়েক মাস আগে। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর বটতলা বাজার সিটি করপোরেশনের অনুমোদন পাওয়ার দুই মাস পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে রাস্তার দুই পাশের চেহারা।
বছর দশেক আগে রাস্তার দুই পাশে বস্তি উচ্ছেদ করে বানানো ফুটপাত দখল করে এখন দোকান, বাজার বসেছে।ছোট ছোট ছাপড়া দোকান ভেঙে উঠেছে নতুন নতুন পাকা, আধা পাকা দোকান।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আবাসিক ভবনের পাশেই লাকি বেগমের ভাঙারির দোকান। স্বামী দেলোয়ার হোসেন ৩৭ বছর ধরে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রহরীর কাজ করেন।
দোকানটি তারা নিজেরাই তুলেছেন জানিয়ে লাকি বেগম বলেন, এ জন্য কাউকে ভাড়া দিতে হয় না।
লাকি বলেন, “আমার দোকান রাস্তার ওইপাশে (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পেছনে) ছিল। গতবছর বাজার সমিতি ওই পাশের দোকান ভাঙার সময় বলছিল এই পাশে জায়গা দিব।
“প্রথম দোকান তোলার পরে একবার সরকারি লোকেরা আইসা ভাইঙা দিয়া গেছে। তারপর আমরা আবার দোকান করছি। যদি বলে দোকান করা যাইব না, ছাইড়া দিমু।”
বটতলা বাজারের মধ্যেই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রী নিবাসের ঠিক সামনে তৈরি করা হয়েছিল যুবলীগের একটি কার্যালয়। পরে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট এসে ওই কার্যালয়সহ ফুটপাতের সব দোকান ভেঙে দেন।
এর মাসখানেক পর আবার বাঁশ পুঁতে জায়গা দখল করেন দোকান মালিকরা। আর যুবলীগের কার্যালয়টি যেখানে ছিল, সেখানে এখন বিশাল এক গর্ত হয়ে। ওই গর্ত এখন রাস্তার পাশের নালার অংশ হয়ে গেছে।
এপ্রিলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী কাউন্সিলর মো. শফিউদ্দিন শফি ভোটের আগে তার নির্বাচনী কার্যালয় বসিয়েছিলেন কাওসারের দোকানের উল্টো দিকে। সেই কার্যালয় এখনো রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সাতরাস্তামুখী মূল সড়কে কোনো কারণে জট লাগলেই বেগুনবাড়ির সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে। এ পথ দিয়ে হাতিরঝিলের সড়কে যাওয়ার সুযোগ থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
“আশপাশের স্কুলের বাচ্চারা হেঁটে যাওয়া-আসা করে। তাদেরও গাড়িচাপা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাঁটাপথের দূরত্ব হলেও রাস্তা না থাকায় আশপাশে কোথাও গেলে আমাদেরও ঝামেলায় পড়তে হয়।”
তার প্রশ্ন- বাজার তো আগে থেকেই ছিল, তাহলে ফুটপাত দখল করে কেন দোকান বানানো?
শুধু বেগুনবাড়ি না, কুনিপাড়া, কলোনী বাজারসহ তেজগাঁও এলাকার প্রায় প্রতিটি রাস্তা ও ফুটপাতে দেখা মিলবে বাজার আর দোকানের।