কয়েকবছর আগে দখলের যে সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় পরিচয় হারিয়ে এমন হাল ‘উত্তর যাত্রাবাড়ী পার্কের’। দখল দৃশ্যমান হলেও কর্তৃপক্ষের চোখে যেন কিছুই পড়ে না।
পার্ক ঘুরে দেখা যায়, পার্কের কার্যক্রম নিয়ে একটি সাইনবোর্ড এবং মাঠে ভাঙা দুটি দোলনার কাঠামো ছাড়া বিনোদনের আর কোনো ব্যবস্থা সেখানে এখন আর নেই।
সীমানা বেষ্টনীতে ঝোলানো সাইনবোর্ডে ‘….এলাকাবাসীর জন্য এই পার্ক অতি জরুরি’ লেখাটি যেন এলাকাবাসীকেই উপহাস করছে।
ফলের আবর্জনায় এই পার্ক যেন মশার বংশবিস্তারেরও কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
ফল ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ শুরু হলে শ্রমিকরা এই পার্কে অস্থায়ী আবাস গড়েন। ফ্লাইওভার নির্মাণ শেষে শ্রমিকরা চলে গেলে পার্কের দখল নেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
“পার্ক তো এখন আর পার্ক নাই, সবকিছু উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। আগে খেলাধুলার জায়গা ছিল, ছেলেপেলেরা খেলত। বছরে দুইটা ঈদের জামাত হইত, এখন আর হয় না।”
এর পশ্চিম পাশ দখল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়ের জন্য আধাপাকা ঘর উঠেছে। কার্যালয়ের সাইনবোর্ডে লেখা- ‘আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমূহ, প্রধান কার্যালয়, যাত্রাবাড়ী পার্ক, ঢাকা’।
আরেক প্রান্তে রয়েছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয় ও কয়েকটি চা দোকান। এমনকি নবনির্বাচিত ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ও এই পার্কের ভেতরে।
তবে পার্কের নাজুক অবস্থার কথা স্বীকার করে এর সংস্কারে তৎপর হওয়ার কথা জানিয়েছেন সরকার সমর্থক কাউন্সিলর মো. আবুল কালাম।
দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করে পার্কটিকে নতুন করে সাজাতে সিটি করপোরেশনের কাছে বাজেট চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনসার আলী খান বলেন, পার্কের ভেতরে যেসব স্থাপনা তা ‘অচিরেই’ উচ্ছেদ করা হবে।
“পার্কগুলোর দিকে আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি। ঢাকা দক্ষিণের সব পার্ক জনসাধারণের বিনোদন ও অবসর যাপনের উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অচিরেই এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হবে।”