শিশুপার্ক দখলে নিয়ে ট্রাকস্ট্যান্ড, বাড়তি এল যানজট

সরু গলির পাশ ঘেষে ঠাসাঠাসি ঘর, দম ফেলার জায়গারও যেন অভাব; সেই পুরান ঢাকায় শিশুদের বিনোদন আর বাসিন্দাদের ঘোরাঘুরির পার্কটিও এখন ট্রাকের দখলে।

কাজী মোবারক হোসেনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2015, 01:47 PM
Updated : 28 June 2015, 03:28 PM

পুরান ঢাকার ইংলিশ রোড শিশুপার্কটি দখল করে গড়ে উঠেছে ট্রাকস্ট্যান্ড। শুধু পার্ক বেদখলেই শেষ হয়নি, এর কারণে তাঁতীবাজার-রায় সাহেব বাজার এলাকায় নিয়মিত দেখা দেয় যানজট।

প্রায় তেত্রিশ বছর আগে তৎকালীন রাষ্টপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় আসার পরপরই পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড় থেকে রায় সাহেব বাজার মোড় পর্যন্ত খাল ভরাট করে তৈরি করেছিলেন ইংলিশরোড শিশুপার্ক।

তবে সাদেক হোসেন খোকা ঢাকা সিটির মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পার্কটির সৌন্দর্য বর্ধনে গাছলাগানো ও বাচ্চাদের জন্য খেলা-ধুলার ব্যবস্থা করেছিলেন বলে জানান এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ ঘোষ।

তিনি বলেন, “কথা বলে কী লাভ? সকাল-বিকাল যেখানে হাঁটতাম, শিশুরা খেলাধুলা করত- সেই জায়গা এখন ট্রাকস্ট্যান্ড।”

পুরান ঢাকার ইংলিশ রোডের এই জায়গাটি পার্ক হলেও এখন তা বোঝা মুশকিল। পার্ক দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ট্রাক রাখা হলেও সে দিকে কোনো নজর নেই কর্তৃপক্ষের। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

রাস্তার উপর যত্রতত্র ট্রাক রাখায় হারিয়েই গেছে পুরান ঢাকার ইংলিশ রোডের পার্কটি, সংকীর্ণ হয়ে গেছে তার পাশের রাস্তাও। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

২০০৮ সালে তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা পার্কের একপাশে ‘নগরে নিসর্গ’ নামে একটি ফোয়ারা তৈরি করেন, যা এখনও আছে। ২০১২ সালের শেষ দিকে শিশুপার্কটি দখলে নিয়ে সেখানে ট্রাকস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়।

রোববার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পার্কের পাশাপাশি রাস্তার একপাশ দখলে নিয়ে গড়ে তোলা অবৈধ এ ট্রাকস্ট্যাণ্ডের তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় ওই এলাকায়।

পার্কের পাশের স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, “সরকার পরিবর্তন হলেই পার্ক পরিবর্তন হয়ে যায়। এখানে ট্রাকস্ট্যান্ড গড়ে উঠায় এলাকাটি মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।”

এ বিষযে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালিদ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিটি করপোরেশনের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে ট্রাকস্ট্যান্ডটি গড়ে উঠেছে।

“আমরা বেশ কয়েকবার এটা উচ্ছেদ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু উচ্ছেদ করতে গেলে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়।”

রোজার ঈদের পরে আবার সেখানে উচ্ছেদ অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সিটি করপোরেশনের এই কর্মকর্তা।

অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ নিয়ে পুলিশের ভূমিকা জানতে চাইলে কোতয়ালি থানার ওসি আবুল হোসেন বলেন, “এটা সিটি করপোরেশনের ব্যাপার। এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।