ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রনেতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদের স্মরণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে ‘ঊনসত্তর শহীদ আসাদ সরণিতে’ জাদুঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০০৮ সালে।
ওই বছরের ২০ জানুয়ারি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন ঢাকার তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।
প্রকল্পের আওতায় রাস্তার ওপর চারতলা ভবনে জাদুঘর করার কথা রয়েছে। এজন্য রাস্তার ওপর ভবনের প্রথম ফ্লোর এবং রাস্তার দুই পাশে দুটি করে চারটি সিঁড়ি যুক্ত করার পর থেকেই কাজ থমকে আছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০১২ সাল থেকে বন্ধ আছে এর কাজ।
প্রকল্পটি ঘুরে দেখা গেছে, একটি সিঁড়ি দখল করে বসানো হয়েছে কাপড়ের দোকান। আরেকটিতে মোবাইল ফোনের ফ্লেক্সিলোডের দোকান।
ফ্লেক্সিলোডের দোকানের মালিকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি দ্রুত দোকান বন্ধ করে দেন।
অন্য দুটি সিঁড়িতে রিকশা মেরামত ও রান্নার নানা জিনিসপত্র রাখা হয়েছে। এ সিঁড়িকে কেন্দ্র করে পাশেই রিকশার গ্যারেজ গজিয়ে উঠেছে। মাঝেমধ্যেই বসে অস্থায়ী দোকান।
স্থানীয়রা জানালেন, রাস্তার ওপর অর্ধনির্মিত ফ্লোরে সন্ধ্যার পর ভীড় জমে মাদকসেবীদের। সিঁড়ির জঞ্জাল ঠেলে সেখানে উঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাপড় দেখে তার সত্যতাও মিলল।
চারপাশের দোকানের মালিকরা বর্জ্য ফেলার জন্য বেছে নিয়েছেন জাদুঘরের পিলারের গর্তকে। রাস্তায়ও ফেলে রাখা হয় বর্জ্য। স্থানটি ভবঘুরে আর মাদকসেবীদের মলমূত্রত্যাগের স্থানে পরিণত হওয়ায় উৎকট গন্ধে পথচারীদের প্রাণ ওষ্ঠাগত।
আরেক পথচারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “মূল রাস্তার পাশে এভাবে উন্মুক্তভাবে মূত্রত্যাগ হবে, ময়লা ফেলা হবে- এটা কেমন কথা? দুই পাশের ব্যস্ত দুটি রাস্তার মধ্যে যেন ময়লার দ্বীপ হয়ে ওঠেছে এখানে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ওই এলাকায় প্রায়ই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়।
“এজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। জনগণ সচেতন না হলে কতদূর করা সম্ভব?’- বলেন সিটি করপোরেশনের এই কর্মকর্তা।
প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে না পারলেও সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম টেলিফোনে জানিয়েছেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিল ঠিকমতো পরিশোধ না করায় তারা কাজ বন্ধ রেখেছে।