ডাস্টবিনের সড়ক

এক কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি ময়লা ফেলার জায়গা, একস্থানে আবার চারটি ডাস্টবিন। ডাস্টবিন আর ছড়ানো আবর্জনায় সংকুচিত গাড়ি চলার স্থান। আবর্জনার দুর্গন্ধ, যানজট আর খানাখন্দে ভরা পুরান ঢাকার মাজেদ সরদার সড়কের চিত্র এটি। 

মাসুম বিল্লাহবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2016, 06:08 AM
Updated : 5 Jan 2016, 06:08 AM

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দশকেরও বেশি সময় ধরে সড়কটি ‘ডাস্টবিনের দখলে’ থাকলেও সেগুলো সরানো বা নিয়মিত পরিষ্কারে ‘উদাসীন’ কর্তৃপক্ষ।

রোববার বাংলাদেশ মাঠের এক কোণে পানির পাম্পের সামনে এক জায়গায়ই চারটি ডাস্টবিন দেখা গেছে। পাশে সড়কের ওপরই অবস্থান করছে আবর্জনার ভ্যান। তীব্র দুর্গন্ধ আর খানাখন্দ পেরিয়ে থমকে থাকা যানবাহনের গলিঘুঁচি দিয়েই চলতে দেখা গেছে পথচারীদের।

বাংলাদেশ মাঠের দক্ষিণপাশে বাড়ি ব্যবসায়ী আফতাব গণির। সড়কজুড়ে আবর্জনার ভোগান্তির কথা জিজ্ঞেস করলে ‘দীর্ঘশ্বাস’ ফেলেন।

আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় কি-না, জানতে চাইলে রড, বালি আর সিমেন্টের এ দোকানি বলেন, “তাও তো বুঝি না, সারাদিনই ময়লা থাকে। সুইপাররা নিজেগোর ইচ্ছামতো কাজ করে। কিছু বললে তো মাঝে মাঝে কাজ-ই বন্ধ করে দেয়।”

ডাস্টবিন সরানোর জন্য কয়েকবার বলা হলেও সিটি করপোরেশন তাতে ‘কান দেয়নি’ বলে তার অভিযোগ।

কিছুদূর এগিয়ে ঐতিহ্যবাহী সিক্কাটুলি পুকুর আর শহীদ খালেক সরদার পার্কের সামনের অংশে মিলল আরেকটি আবর্জনা ফেলার জায়গা।

মাজেদ সরদার এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান জানালেন, শীত-গ্রীষ্ম সবসময় এখানে দুর্ভোগ।

“সিটি করপোরেশনের উদাসীনতার কারণেই এলাকাটি দিন দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। রাস্তার উপরে ডাস্টবিন, তাও ময়লা ঠিক সময়ে পরিষ্কারও করা হয় না। এখন তো শুষ্ক মওসুম। বৃষ্টির দিনে আসলে বুঝতে পারতেন, পরিস্থিতি কেমন দুর্বিষহ।”

মাজেদ সরদার সড়কের সর্বশেষ ডাস্টবিনটির অবস্থান সাত রওজা এলাকার ‘পুলের ঢাল’ এ। এখানে ১০ হাত চওড়া রাস্তার অর্ধেকই ডাস্টবিনের দখলে। সঙ্গে উপরি উপচেপড়া আবর্জনা।

ডাস্টবিনের কারণে এখানে রাস্তা এমনভাবে সংকুচিত হয়েছে যে, পাশাপাশি দুটি রিকশাও চলে না।

বছরের পর বছর ধরে চলা এ দুর্ভোগের অবসান চান স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবউদ্দিন।

ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, “তিরিশ বছর ধইরা এই অবস্থা দেখতাছি। সিটি করপোরেশনের জায়গা এইডা। তাও ডাস্টবিন সরব না। খাড়াইয়া দেখেন না, গাড়ি কেমনে পার অয়!”

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন রাকিব উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, ‘বিকল্প স্থান’ না থাকায় ডাস্টবিনগুলো সেখানে রাখতে বাধ্য হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন।

“জায়গার ব্যবস্থা করতে পারলে সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে।”

ডাস্টবিনে সারাক্ষণই ময়লা থাকে- এমন অভিযোগের জবাবে এ কর্মকর্তা বলেন, “জনদুর্ভোগের কথা আমাদের বিবেচনায় আছে। এজন্য সেগুলো নিয়মিতই পরিষ্কারের চেষ্টা করা হয়।”