হানিফ ফ্লাইওভার: আলোর নিচে ‘অন্ধকার’

রাজধানীর ‘মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার’ (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার নামে পরিচিত) খুলে দেওয়ার পর ঢাকার ব্যস্ততম প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ি থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত রাস্তা যানজটমুক্ত হলেও, স্বস্তি নেই উড়ালপথের নিচের রাস্তায়।

ফয়সাল আতিক নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2015, 04:58 AM
Updated : 17 Dec 2015, 04:58 AM

ওপরে ঝকঝকে ফ্লাইওভার আর নিচে রাস্তাজুড়ে গর্ত, ফেলে রাখা শুকনো মাটি, আবর্জনা আর ধুলাবালি- যেন ‘আলোর নিচে অন্ধকার’।

ফ্লাইওভারের নিচে কাজলা থেকে গুলিস্তানে রাস্তা অনেকদিন ধরে সংস্কার না করায় প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন রিকশা, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনের আরোহীরা। ঘন ধুলায় এই পথে হাঁটার সময় শ্বাস নেওয়াই দায়।

ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় ভারি যন্ত্র আর গাড়ি ব্যবহারের কারণে এই রাস্তা ধীরে ধীরে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। নির্মাণকাজ চলার সময় মাঝে মাঝে সাময়িকভাবে রাস্তা সংস্কার করা হলেও ২০১০ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্লাইওভার উদ্বোধন করার পর আর মেরামত করা হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, যানজট কমানোর ‘স্বস্তি’তে নিচের রাস্তার দিকে একেবারেই নজর দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

ছবি: নয়ন কুমার

ছবি: নয়ন কুমার

বুধবার ফ্লাইওভারের পূর্বপ্রান্ত কাজলা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ছোটবড় খানাখন্দ দেখা গেছে অজস্র।

ফ্লাইওভারের নিচে অনেকদিন ধরে জমে থাকা শুকনো মাটি, ময়লা-আবর্জনা শুকিয়ে যাওয়ায় এলাকার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। ব্যস্ত এ রাস্তায় দিনরাত- সব সময়ই ঘন ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। ফলে আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা ভুগছেন সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ।

“বর্ষায় এই সড়কের দুই পাশের দোকানগুলোকে পোহাতে হয়েছে কাদার উপদ্রব, এখন ধুলার,” বলেন সায়েদাবাদ জনপথের মোড়ে ‘খন্দকার মেটালের’ মালিক মিজান খন্দকার।

তিনি জানান, অব্যবস্থাপনার কারণে একসময়ের ব্যস্ত রাস্তার পরিবেশ বিষিয়ে উঠছে।

“এসব কারণে কাস্টমার কমে গেছে, ব্যবসা বাণিজ্যের অবস্থা হয়েছে শোচনীয়। আমরাও তো অসুস্থ হয়ে পড়ছি। ডাক্তার আর কি বলবে, ধুলা খেয়ে খেয়ে যে অসুস্থ হচ্ছি সেটা তো নিজেরাই টের পাচ্ছি।”

ছবি: নয়ন কুমার

ছবি: নয়ন কুমার

একই অভিযোগ ওয়ার স্ট্রিটের ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ দাসেরও।

“ফ্লাইওভার উদ্বোধনের পর প্রায় তিন বছর ধরে এ অবস্থা। পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে অনেক প্রতিবেদনও হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার দেখি না, সংস্কারও না,” ক্ষোভ ঝরে তার কণ্ঠে।

তবে এ অবস্থা বেশিদিন থাকবে না বলে আশার বাণী শুনিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মুহাম্মদ বেলাল।

ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তার অবস্থা নিয়ে করপোরেশনের ‘নীতি নির্ধারণী’ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অচিরেই রাস্তার সংস্কার কাজের জন্য দরপত্র চাওয়া হবে।”

যদিও কবে নাগাদ সংস্কারের কাজ শুরু হবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।