ফেলে রাখা ইট, সুরকি আর লোহলক্কড়ে সৃষ্ট যানজট এবং দোকানিদের দখলে থাকা ফুটপাতের কারণে ওই ময়লা-আবর্জনা মাড়িয়েই এ পথে চলতে হয় ‘নাকে হাত চাপা’ পথচারীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের উদাসীনতা আর পরিকল্পনার অভাবেই ফুলবাড়িয়া, বঙ্গবাজার ও গুলিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের এই হাল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় গিয়ে সড়কের দুই পাশে সিটি করপোরেশনের দুটি ময়লা উপচানো ডাস্টবিন ও বিশৃঙ্খলভাবে বেঁধে রাখা ১০-১৫টি ঘোড়া দেখা যায়। এসব ঘোড়া দিয়েই পুরান ঢাকার ‘ঐতিহ্যবাহী টমটম সার্ভিস’ চলে।
“বাকিদের ঘোড়া রাস্তায় থাকে। ঘোড়ার খাবার ও নিরাপত্তার জন্য বড় জায়গার দরকার। তা আমাদের অনেকেরই নাই।”
পাঁচটি ঘোড়া দিয়ে দুটি টমটম চালান রাকিব। টমটম চালকদের দূরাবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এই এলাকা থেকে কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই আমাদের।”
অবশ্য রাস্তার এ ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’ হওয়ার পেছনে ঘোড়ার বিষ্ঠা যে অন্যতম কারণ, তা নিজেও স্বীকার করেছেন রাকিব।
“আমরা মেথর দিয়ে প্রতিদিনই পরিষ্কার করাই। তাই আমাদের এখানে আবর্জনা-দুর্গন্ধ কম। অন্যরা তো পরিষ্কারই করতে চায় না!”
আশেপাশের ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তার পাশে থাকা ড্রেন ও ডাস্টবিন দুটোও করপোরেশনের লোকজন ঠিকমতো পরিষ্কার করে না।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, সিটি করপোরেশনের লোকজন আসে না বলে তারাই চাঁদা তুলে মাঝেমধ্যে পরিষ্কার করান। তবে এটা কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নয়।
আহমেদ পার্সেল সার্ভিস নামে এক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সোহেল রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চললেও সেদিকে কারও নজর নেই। বর্ষাকালে তো পানি জমে ছিল। এখন শুকনো মৌসুমেও চারিদিকের অবস্থা এতো খারাপ!”
তিনি জানান, নিয়মিত পরিষ্কার হয় না বলে স্থানীয়দের মধ্যেও পরিষ্কার রাখার চেষ্টা নেই। আবাসিক এলাকা আর কাঁচাবাজার থেকে ইচ্ছেমতো ময়লা-আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলা হয়।
“কয়দিন আগে আইলে বুঝতেন কী অবস্থা আছিল। দেখতেছেনই তো মানুষ কেমন নাক ধইরা ধইরা যাইতেছে।”
রাস্তার এই ‘বেহাল’ অবস্থা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ রতন ‘দ্রুত সমস্যা সমাধান’ এর আশ্বাস দেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মঙ্গলবার থেকে চাঁনখারপুলে খানাখন্দ মেরামত ও নিমতলী-বঙ্গবাজার এলাকার ময়লা-আবর্জনা দূর করতে কাজ শুরু হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
বিশৃঙ্খলভাবে রাখা ঘোড়ার গাড়িগুলোকে আগেও কয়েকবার উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
“এখনও ওরা সেখানে আছে কি-না জানি না, থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”