দুর্গতিতে প্রগতি, নর্দমা মাড়িয়ে চলাচল

নর্দমার পানি আর আবর্জনায় প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে বাড্ডা থেকে রামপুরাগামী প্রগতি সরণি। দখল থেকে নিস্তার পায়নি ভাঙা-চোরা ফুটপাত; দোকানের পেটে খুঁজে পাওয়া যায় হেঁটে চলার এই পথ।

ফয়সাল আতিকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 August 2015, 02:56 PM
Updated : 28 August 2015, 07:46 PM

শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উত্তরে বাড্ডার হুসেন মার্কেট থেকে শুরু হয়ে লিংক রোড, মধ্য বাড্ডা, মেরুল বাড্ডা হয়ে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত একরকম দৈন্য দশার মধ্যে কোনোরকমে ‘বেঁচে’ আছে প্রগতি সরণি। নর্দমা থেকে উপচে পড়া ময়লা পানিতে বিভিন্ন স্থানে প্রায় সড়কের অর্ধেক সয়লাব।

ফুটপাতের উপর যত্রতত্র গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ দোকান, কোথাও সড়ক ঘেঁষেই তৈরি করা হয়েছে স্থাপনার সীমানা প্রাচীর। আর যে অংশ দখলমুক্ত দেখা গেছে সেগুলোও ভাঙা-চোরা, চলাচলের অনুপযোগী।

তাই বাধ্য হয়েই পথ চলার জন্য মূল রাস্তাকেই বেছে নিতে হচ্ছে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, মূল সড়কটি সরু হয়ে আসায় তা যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাড়িতে মাত্র চার/পাঁচ মিনিট দূরত্বের এই সড়কটিতে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের শেষ প্রান্তের সড়কটিতে দীর্ঘদিন ধরে এ পরিস্থিতি চললেও সমস্যার সমাধানে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

মধ্য বাড্ডা বাসস্ট্যান্ডের একাধিক টং দোকানি জানান, সারা বছরই ওই সড়কের বিভিন্ন স্থানে নর্দমার পানি জমে থাকে। এতে সেখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে রিকশা, ভ্যান, বাইসাইকেল ও মটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়।

মেরুল বাড্ডা এলাকার টাইলস ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রায় তিন বছর আগে সড়কটির ফুটপাতে ইট বিছানো হলেও কাজের মান ভালো ছিল না। সংস্কারের কিছু দিনের মধ্যেই তা আবার ভেঙে যেতে থাকে।

“রাস্তার পাশের নর্দমাটিও নামেমাত্র পরিষ্কার করা হয়। ফলে এর মধ্য দিয়ে পানি সরতে পারে না। রামপুরা খালে নর্দমার পানি নামার কথা থাকলেও ময়লা-আবর্জনায় নর্দমার সেদিকের অংশটা প্রায় নিশ্চিহ্ন। এসব কারণে ময়লা পানিতে রাস্তা সয়লাব হয়ে থাকে।”

প্রগতি সরণি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পূর্ব প্রান্তে। সড়কের পূর্ব পাশেই বাড্ডা ইউনিয়ন। পূর্বপাশের দোকানগুলোও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে থাকে। তবে দোকান থেকে বেরিয়ে সিটি করপোরেশনেই পা রাখতে হয় ব্যবসায়ীদের।

টাইলস ব্যবসায়ী কামাল বলেন, “সিটি করপোরেশনের প্রান্তিক অঞ্চল হওয়ায় হয়তো জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টির আড়ালে থাকছে সড়কটি। তবে এর প্রভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী শহুরে বাসিন্দারা।”

ভাঙা-চোরা ফুটপাত ধরেই লাফিয়ে-ঝাঁপিয়ে পথচলা।

এ সমস্যার সমাধানে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার মো. ওসমান গণি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাত্র কয়েকমাস আগে নির্বাচিত হলাম। সংস্কারের কাজগুলো প্রক্রিয়াধীন আছে।

“নতুন মেয়র সাহেব এসব বিষয়ে খুবই আন্তরিক। তিনি ইতোমধ্যে বিভিন্ন সড়কের পাশে থাকা ভাসমান দোকান সরিয়ে দিয়েছেন। সড়কগুলোকে ঘিরে বনায়নেরও চিন্তাভাবনা করছেন। আস্তে আস্তে ফুটপাত সংস্কার ও ড্রেনেজ পরিষ্কারের কাজগুলো করা হবে।”