ঢাকার সূত্রাপুর এলাকার ধূপখোলা মাঠের এমন দৈন্য দশার জন্য কারা দায়ী সে প্রশ্নে না গিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন এলাকাবাসী।
তারা বলছেন, তারা তাদের শিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত এই মাঠ আগের অবস্থায় দেখতে চান।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নির্মাণ সামগ্রী রাখার কাজে ব্যবহার করা এই মাঠ ওই ফ্লাইওভার উদ্বোধনের দুই বছরেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভাষ্য, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করতে পারায় এই দুর্ভোগ।
গেন্ডারিয়ার কাঠেরপুল এলাকার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী মো. শাহীন আলম বলেন, “আমরা এই মাঠে খেলাধুলা কইরা বড় হইছি। ফ্লাইওভার বানানোর সময় এই মাঠ বন্ধ ছিল, কিন্তু ফ্লাই ওভার চালু হইল দুই বছর হয়া গেছে। তারপরও ক্যান এই মাঠটা ঠিকঠাক করা হইতাছে না- কেউ কয়ার পারে না।”
শাহীন আলম জানান, আগে এর পুরোটাই একটি মাঠ ছিল। এরশাদ শাসনামলে ১৯৮৫ সালের দিকে মাঠটিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। মাঠের পূর্বপাশ বরাদ্দ দেওয়া হয় ইস্ট অ্যান্ড নামের একটি ফুটবল ক্লাবকে এবং উত্তর পাশ দেওয়া হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে।
শুধু মাঠের দক্ষিণ অংশটি স্থানীয় জনগণের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
শাহীন বলেন, “এহন তো দিনের বেলা- বুঝা পারতাছেন না। সন্ধ্যা হইলেই এলাকার সব নেশাখোরগো আড্ডার জায়গা হয় এই ধূপখোলা মাঠ।”
পরিত্যক্ত এই মাঠে খেলতে আসা ঢাকা মুসলিম হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আরমান বলে, “আমরা এমনিতে জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি আর ইস্ট অ্যান্ড ক্লাবের মাঠে খেলি। গত এক মাস ধরে ওই মাঠে (ইস্ট অ্যান্ড) মেলা হচ্ছে। তাই ওখানে খেলাধুলা করা যাচ্ছে না।”
ক্ষোভের সঙ্গে মহিউদ্দিন বলেন, “গত ৫ বছর ধরে ধূপখোলা মাঠটা ব্যবহারের অনুপোযোগী। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য চেষ্টা কম করি নাই। এ পর্যন্ত দুইবার সিটি করপোরেশন বরাবর চিঠি দিয়েছি, একবার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি, মেয়র সাহেবের সঙ্গে দেখা করেছি। সবাই আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।”
তিনি বলেন, “আসলে ফ্লাইওভারের ওপরের দিকের কাজ শেষ হয়ে গেলেও নিচের দিকে এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। যে কোম্পানি কাজ করেছিল তাদের চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।”
ওই কাজ শেষে হলেই মাঠ সংস্কার করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।