তারা বলছেন, প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং হোমিওপ্যাথি- দুই ধরনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে ভারত। সমঝোতা স্মারকের পর দুই দেশের মধ্যে প্রশিক্ষণ, গবেষণা, বিশেষজ্ঞ বিনিময়সহ নানা বিষয়ে সহযোগিতা পাওয়ার দুয়ার বাংলাদেশের জন্য খুলে যাবে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন এবং সফররত ভারতের আয়ুর্বেদ, ইযোগা ও ন্যাচারপ্যাথি ইউনানী, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথি (আইয়ুস) বিষয়ক সচিব নিলাঞ্জন স্যান্যাল নিজ নিজ দেশের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের বৈঠকের ফাঁকে এই স্মারকটি সই হয়।
‘আয়ুর্বেদ’ নামে পরিচিত প্রাকৃতিক ওষুধে ভারতের রয়েছে সমৃদ্ধ প্রাচীন ইতিহাস। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও অনেকদিন ধরে রোগ নিরাময়ে এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। মঙ্গলবার ঢাকায় সংস্থার আঞ্চলিক বৈঠকের আলোচনাতেও গুরুত্ব পেয়েছে বিষয়টি।
প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি বিষয়ে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য গত জুনে ভারতের আয়ুশের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে গেছে। সবশেষ কয়েকদিন আগেই ভারতের মন্ত্রিসভা বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের অনুমোদন দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে স্মারকটি সই হয়।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের ৩২তম বৈঠকের উদ্বোধনী অধিবেশনেও প্রাচীন এই চিকিৎসা পদ্ধতির বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায় ভারতের সঙ্গে সই হওয়া সমঝোতা স্মারককে স্বাগত জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এই স্মারকের কারণে আমরাই বেশি লাভবান হব। আমাদের চিকিৎসকরা (হোমিওপ্যাথি) সাধারণত গ্রাজুয়েশনের পর আর উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ পান না। আমাদের এ ধরনের কোর্স কিংবা সুবিধাও নেই।”
বাংলাদেশের ৫১টি হোমিওপ্যাথি কলেজে মূলত দুই ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি চালু রেয়েছে। এর একটি হচ্ছে চারবছরের ডিপ্লোমা কোর্স। এতে ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ রয়েছে। এছাড়া এক বছরের ইন্টার্নসহ স্নাতক কোর্সের মেয়াদ পাঁচ বছর।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা জনপ্রিয় হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার তাদের আগের মেয়াদে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ৯৪ জন চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক মন্ত্রীদের বৈঠক এবং আঞ্চলিক কমিটির তিন দিনব্যাপী ৬৭তম অধিবেশনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি সমঝোতা স্মারক সই করাসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার ঢাকায় রয়েছে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন হর্ষবর্ধন।