বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের যুগে বাংলাদেশ

দেশে প্রথমবারের মত ব্ল্যাড ক্যান্সারে আক্রান্ত এক রোগীর শরীরে সফলভাবে অস্থিমজ্জা (বোনম্যারো) প্রতিস্থাপনে সফলতা পেয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2014, 06:35 PM
Updated : 10 March 2014, 06:35 PM

সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “আজ আমরা সফলভাবে যাত্রা শুরু করলাম। বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় একটি নতুন যুগের সূচনা হল।”

তিনি জানান, দেশের ক্যান্সাররোগীদের ১১ শতাংশ ব্ল্যাড ক্যান্সারে আক্রান্ত, যা রক্ত তৈরির কাজে বিঘ্ন ঘটায়।

“এতদিন দেশে বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা না থাকায় এসব রোগীর দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করাতেন। আর এ চিকিৎসার পেছনে ব্যয় হত ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত।”

দেশে এই বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের খরচ কত হবে, তা নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান মন্ত্রী।

এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগীর শরীরের আক্রান্ত বোনম্যারো কেমোথেরাপির মাধ্যমে নষ্ট করে দাতার শরীর থেকে নেয়া স্টেমসেল নিয়ে রক্ত প্রবেশের মতো করেই শরীরে প্রবেশ করানো হয়।  

শরীরের অন্য অঙ্গের মতো বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় না।

দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে স্টেমসেলগুলো থেকে নতুন রক্তকণিকা তৈরি হতে শুরু করে। এ সময় নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের বোনম্যারো প্রতিস্থাপন বিভাগের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক এম এ খান বলেন, দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি শেষ হবে। তখনই চিকিৎসারত ৫২ বছরের রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া যাবে।

তবে রোগীর ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা উল্লেখ করে তার পরিচয় জানাননি এই চিকিৎসক।

এম এ খান বলেন, “বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের পর ৯০ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে যান। ১০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে এটি কাজ নাও করতে পারে।” 

গত বছরের ২০ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বোনম্যারো প্রতিস্থাপন সেন্টারটি যাত্রা শুরু করে।  

তখন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের সহযোগিতায় সরকার এ সেন্টারটির চিকিৎসক ও সেবিকাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

অধ্যাপক খান জানান, এই সেন্টারটি থেকে আগামী তিন মাসের জন্য বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের রোগীর তালিকা ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে রয়েছে।

বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বোনম্যারো প্রতিস্থাপন সেন্টারটিতে পাঁচটি  কেবিন রয়েছে, যেখানে একইসঙ্গে পাঁচজনের চিকিৎসা করা সম্ভব।