বিবিসি জানায়, ডিএনএ’তে পৌরুষত্ত্বের প্রতীক হিসেবে ‘ওয়াই ক্রোমোসোম’ এর গুরুত্ব অনেকখানি কমিয়ে এনেছেন বিজ্ঞানীরা। আর একারণে একে একেবারেই বাদ দিয়ে দেয়া সম্ভব বলে মানছেন তারা।
শুধুমাত্র পুরুষের শরীরে থাকে এই ওয়াই ক্রমোসোম- লিঙ্গ নির্ধারণে যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা সর্বজনবিদিত। কিন্তু এই ক্রমোসোম না থাকলেও পুরুষত্বহীন হওয়ার কারণ নেই- বিজ্ঞানীরা এখন সেকথাই বলছেন।
হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মনিকা ওয়ার্ডের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায়
ইঁদুরের ওপর পরীক্ষ-নিরীক্ষা চালিয়ে পাওয়া গেছে এ তথ্য।
তারা ওয়াই ক্রোমোসোমের জিনগুলো থেকে মাত্র দুইটি জিন প্রজননের জন্য কাজে লাগান। ‘জার্নাল সায়েন্স’ এ প্রকাশিত গবেষণার ফলে দেখা গেছে, এতেও প্রজননে সক্ষম হয়েছে পুরুষ ইঁদুর।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওয়াই ক্রমোসোমের দুটো জিন দিয়ে যে ইঁদুরের প্রজনন তারা ঘটিয়েছেন সে ইঁদুরগুলো সাধারণভাবে পুরুষত্বহীন। কিন্তু এই দুটো জিনই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কাজ করে প্রজনন ঘটাতে পেরেছে।
আর তাই ওয়াই ক্রমোসোমের ত্রুটির কারণে পুরুষত্বহীনতায় ভোগা মানুষদের জন্য একদিন গবেষণার এ ফল কাজে আসবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা এর আগে ওয়াই ক্রমোসোম থেকে ২ টির বেশি জিন ব্যবহার করে ইঁদুরের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু এবার মাত্র ২ টি জিন দিয়েই প্রজনন সম্ভব হওয়ায় বিজ্ঞানীদের আশা ভবিষ্যতে ওয়াই ক্রমোসোম ছাড়াই প্রজনন সম্ভব হবে।
তাছাড়া, ওয়াই ক্রমোসোমের যে জিন লিঙ্গ নির্ধারণ অর্থাৎ পুরুষ হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে সেই জিনগুলোর ভূমিকা ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে করা গেলে সেক্ষেত্রেও ওয়াই ক্রমোসোমের আর প্রয়োজন পড়বে না।
তবে গবেষকরা মানুষের ক্ষেত্রে এখনই এ ব্যাপারে খুব বেশি আশা দিচ্ছেন না। তারা বলেন, এ গবেষণা এখনই মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ ইঁদুরের জিনের সঙ্গে মানুষের জিনের পার্থক্য আছে।