‘অটিস্টিক শিশুরা পুরোপুরি সুস্থ হতে পারে’

সঠিক সময়ে সমস্যা চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে অটিস্টিক শিশু পুরোপুরি সুস্থ হতে পারে বলে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নুরুল ইসলাম হাসিববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2013, 10:03 AM
Updated : 12 Feb 2013, 00:49 AM

সম্প্রতি জার্নাল অফ চাইল্ড সাইকোলোজি অ্যান্ড সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। অটিজম আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে দীর্ঘদিনের যে বিশ্বাস ছিল তাকে ভুল প্রমাণ করেছে এই প্রতিবেদন।

অটিজম নিয়ে অভিভাবক ও বিজ্ঞানীরা যেভাবে কথা বলেন এবং এ সম্পর্কিত তাদের ভাবনা বদলেরও সুযোগ এসেছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ কানেক্টিকাটের ডেবোরাহ ফিনের নেতৃত্বে একদল গবেষক ৩৪ জন অটিজম আক্রান্তের ওপর এ গবেষণা চালান যাদের বয়স আট থেকে ২১ বছরের মধ্যে। তাদের কয়েকজনের ক্ষেত্রে জীবনের প্রথমভাগে অর্থাৎ পাঁচ বছরের আগে অটিজমের লক্ষণ থাকলেও পরে আর তা থাকেনি। পরবর্তীতে অন্যদের মতো স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে তারা।

তাদের মধ্যে বেশিরভাগের ক্ষেত্রে অটিজমের লক্ষণ কমে আসারও প্রমাণ পেয়েছে তারা।

তবে কি কারণে তাদের উন্নতি হয়েছে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট কিছু না বলতে পারলেও জৈবিক কারণে এটা হতে পারে বলে তারা মনে করছেন।

অবশ্য অটিজম আক্রান্তদের ক্ষেত্রে দ্রুত সমস্যা সনাক্তকরণ এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক টমাস ইনসেল বলেন, “সাধারণত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অটিজমের লক্ষণ চলে না গেলেও গবেষণায় উত্তরণের বিপুল সম্ভাবনা দেখা গেছে।

“কোনো শিশুর ক্ষেত্রে থেরাপি দেয়ার একটা সময় পরে আবার বেশ কয়েক বছর পরেও অগ্রগতি ধরা পড়তে পারে।”

এই গবেষণার সূত্র ধরে পরবর্তীতে অটিজমের ধরন, থেরাপির ভূমিকা এবং এসব শিশুদের স্থায়ী অগ্রগতির জন্য অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা ওই ৩৪ জনের বর্তমান অবস্থা বের করার জন্য নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। অনেকের ক্ষেত্রে অটিস্টিক শিশুর বাবা-মার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়।

শৈশবের কোনো পর্যায়ে বুদ্ধিমত্তার স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলা হয় অটিজম। এ ধরনের শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন হয় অন্যদের চেয়ে আলাদা। ফলে তারা অন্যদের মতো করে নিজের যত্ন নেয়া শেখে না। নিজে নিজে কাপড় পরা, একা একা খাওয়া বা টয়লেট করা কিংবা অন্যদের কাছে নিজের প্রয়োজন বা ইচ্ছার কথা প্রকাশ করা শিখতেও তাদের সমস্যা হয়।

সরকারি হিসাব মতে বাংলাদেশে দেড় লাখের মতো অটিজম আক্রান্ত মানুষ রয়েছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাভুক্ত দেশগুলো অটিস্টিকদের পরিচর্যা নিয়ে বাংলাদেশের একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।