তিনি বলছেন, “রাজধানী পরিষ্কার রাখতে এবং মশক নিধনে সিটি কর্পোরেশনের আন্তরিকতার অভাবে নগরীতে চিকুনগুনিয়া রোগের বিস্তার ঘটছে।”
মঙ্গলবার নগরীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আলোচনা সভায় এ বক্তব্য দেওয়ার পর সংসদেও একই কথা বলেন তিনি।
জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, “চিকুনগুনিয়া হচ্ছে একটি ভাইরাস। এডিস মশা থেকে এর উৎপত্তি হয়। এই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। এর দায়িত্ব কোনোভাবেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়। তারপরও দায়িত্ববোধ থেকে আমরা চিকুনগুনিয়া নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা ও সচেতনতা নিয়ে কাজ করছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সকল ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
চিকুনগুনিয়া নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়লেও আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এটি কোনো মারাত্মক রোগ নয়।”
চিকুনগুনিয়া নিয়ে সংবাদ মাধ্যম আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অভিযোগ করে নাসিম বলেন, “গণমাধ্যমকে বলতে চাই, অহেতুক আতঙ্ক সৃষ্টি করবেন না। একটি সাধারণ ভাইরাস চিকুনগুনিয়া। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে খুব বেশি সময় লাগে না। আক্রান্ত ব্যক্তি প্যারাসিটামল খেলে, প্রচুর পানি পান করলে এবং বিশ্রাম নিলেই চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে এ রোগ সেরে যায়। এ রোগ হলে স্বাভাবিক খাবার খেতে পারবে।”
চলতি বর্ষা মওসুমের শুরুতে ঢাকায় চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এডিস প্রজাতির এডিস ইজিপ্টি এবং এডিস এলবোপিকটাস মশার মাধ্যমে এ রোগের সংক্রমণ হয়। ডেঙ্গু ও জিকা ভাইরাসও এই মশার মাধ্যমে ছড়ায় এবং রোগের লক্ষণ প্রায় একই রকম।
জ্বর হলেই চিকুনগুনিয়া মনে করে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “জ্বর হলেই জনগণের মধ্যে চিকুনগুনিয়া বলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এই উদ্বেগ সঠিক নয়।”
তিনি বলেন, “জ্বরে আক্রান্তদের প্রতি ১১ জনের মধ্যে একজন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করে ২৭০০ রোগীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৬২৫ জনের চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকার বাইরে যে দু-একজন রোগীর তথ্য পাওয়া গেছে তারা ঢাকা থেকেই আক্রান্ত হয়েছিল। এছাড়া ঢাকার বাইরে এ রোগে আক্রান্তের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।“
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেকও চিকুনগুনিয়ার বিস্তারের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে দোষারোপ করেন।
“রাজধানীবাসী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চিকুনগুনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দুটি সিটি কর্পোরেশন মশার বংশ বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা নগরীর জলাশয়গুলো সময় মতো পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হয়েছে। মশার প্রজনন মৌসুমের আগেই এ সকল জলাশয় পরিষ্কার করতে হবে।”
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান এবং স্বাস্থ্য সেবার মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বক্তব্য রাখেন।