ব্রিটিশ দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট জানায়, গত বছরের মে মাসে ইউরোপিয়ান ফুড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি (ইএফএসএ) এক সতর্কবার্তায় ভোক্তাদের জানায়, পাম অয়েলে যে গ্লাইসিডল ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, তা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
পাম অয়েলকে দুইশ ডিগ্রির বেশি তাপে গরম করলে গ্লাইসিডল ফ্যাটি অ্যাসিড মেলে; পাম অয়েল দিয়ে বানানো অনেক খাবারেই ওই পরিমাণ তাপ লাগে।
ইনডিপেনডেন্ট লিখেছে, বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত অনেক ব্র্যান্ডের খাদ্যপণ্যেই পাম অয়েল ব্যবহার করা হয়। ক্যাডবেরির চকলেটসহ শিশুদের পছন্দের অনেক খাবারেও ব্যাবহার করা হয় পাম অয়েল। কিন্তু ফেরেরোকেই তাদের জনপ্রিয় হেজেলনাট ও চকলেট স্প্রেড নিউটেলা নিয়ে ভুগতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
ইটালির বহু চেইনশপ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিউটেলা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ায় নতুন বছরের শুরুতে ভোক্তাদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টায় ফেরেরো বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করেছে। তারা বোঝাতে চাইছে, তাদের খাবার নিরাপদ।
ইএফএসএ এর সতর্কবাণীর পরও নিউটেলায় অন্য কোনো তেল ব্যবহার না করে পাম অয়েল চালু রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে ফেরোরো বলেছে, খরচ বাঁচাতে নয়, মান ঠিক রাখতেই এটা তারা করছে।
ফেরেরোর পারচেজিং ম্যানেজার ভিনচেনজো তাপেল্লা রয়টার্সকে বলেছেন, নিউটেলায় মাখনের মত মসৃণ স্বাদের যে অনুভূতি মেলে, তা ওই পাম অয়েলের গুণেই। অন্য কোনো তেল দিয়েই তা পাওয়া যায় না।
রয়টার্স এক প্রতিবেদনে দেখিয়েছে, পাম অয়েলের বদলে সূর্যমুখী বা রাইয়ের তেল ব্যবহার করেও কাজটি করা যায়, কিন্তু তাতে খরচ বেড়ে যায় ২২ ডলারের মত। তবে এ হিসাব নিয়ে ফেরেরো কর্মকর্তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইউরোপিয়ান ফুড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি বলছে, সামান্য পরিমাণ গ্লাইসিডল ফ্যাটি অ্যাসিডও শিশুদের ক্ষতির কারণ হতে পারে। এর কোনো নিরাপদ মাত্রাও নির্ধারণ করা হয়নি।
ইএফএসএ এর কনট্যাম প্যানেলের চেয়ার ড. হেলে নাটসেন বলেন, গ্লাইসিডল যে জিনগত পরিবর্তন ও ক্যান্সারের কারণ হতে পারে, তার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ তাদের কাছে আছে।
ভেজিটেবল ওয়েল, কৃত্রিম মাখন, এমনকি প্রক্রিয়াজাত খাবারেও গ্লাইসিডল মিলতে পারে, তবে পাম অয়েলের ক্ষেত্রে এর মাত্রা ও ঝুঁকি অনেক বেশি বলে ইএফএসএ মনে করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থাও গ্লাইসিডল নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে, যদিও তারা কোনো সতর্কবার্তা জারি করেনি।