ডায়াবেটিস সচেতনতায় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন মাশরাফি

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস সচেতনতা আরও বাড়াতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ান ডে ও টি টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করে ‘চেঞ্জিং ডায়াবেটিস’ নামের একটি ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2016, 04:29 PM
Updated : 27 Oct 2016, 04:29 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকার গুলশানে ড্যানিশ দূতাবাসে ডেনমার্কের ওষুধ কোম্পানি নভো নরডিস্ক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সঙ্গে যৌথভাবে এ সংক্রান্ত এক সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই করেন মাশরাফি।

চুক্তি অনুযায়ী, ‘চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখবেন এই ক্রিকেটার।

এই ক্যাম্পেইনে মূলত ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে একটি স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাত্রা এবং খাদ্যতালিকার উপকারিতার ওপরই জোর দেবেন তিনি।

চুক্তি স্বাক্ষর শেষে মাশরাফি বলেন, “এটা খুবই উদ্বেগের বিষয় যে অতি বিপদজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডায়াবেটিস। বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭১ লাখ; অথচ তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশের কোনো ধারণাই নেই যে তারা ইতোমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত।”

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছর ডায়াবেটিসজনিত কারণে দেশে এক লাখ ২৯ হাজার ৩১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস মানুষের জীবনের জন্য হুমকি।

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা ধীরে ধীরে দেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো যেমন, র্হাট, কিডনি, চোখ এবং পা এগুলোর  ক্ষতি করতে থাকে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য সবাইকে নিয়মিত শরীর চর্চা এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যতালিকা অনুসরণের পরামর্শ দেন তিনি।

চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরের স্লোগান হচ্ছে- ‘এখনি সক্রিয় হও, ডায়াবেটিস রুখে দাও’।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এই সচেতনতা কার্যক্রমে সহযোগী হিসেবে কাজ করতে পেরে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) ‘গর্বিত’ বলে মন্তব্য করেন বাডাসের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান।

তিনি বলেন, “ডায়াবেটিসের মহামারী নিয়ন্ত্রণ করাটা সরকারি কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি আমাদের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যান্য অসংক্রামক রোগের মত ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ এবং প্রসার প্রতিরোধে সচেতনতাই সবচেয়ে বড় প্রভাবক।”

ডায়াবেটিস সচেতনতায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে কাজের সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করে সরকারকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান অধ্যাপক আজাদ।

নভো নরডিস্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ রাজন কুমার বলেন, “আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য ডায়াবেটিস এবং এর লক্ষণসমূহ সম্পর্কে গণসচেতনতা তৈরি করা; টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখা এবং আরও বেশি মানুষ যাতে ডায়াবেটিসের জটিলতা মুক্ত একটি সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা।”

২৯ জুন সরকারের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত অসংক্রামক রোগ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার প্রেক্ষাপটে ডায়াবেটিস সচেতনতা বাড়াতে বাডাসের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নভো নরডিস্ক এই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ধারণার বাস্তবায়নে উদ্যোগী ভূমিকায় এগিয়ে আসে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর, বাংলাদেশ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক রুহুল আমিন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি অবার্ট, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিসেল, ঢাকায় ডেনমার্কের শার্জ দ্য' অ্যাফেয়ার জ্যাকব হগার্ড, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি একে আজাদ খান, মহাসচিব মোহাম্মদ সফিউদ্দিন এবং বারডেমের পরিচালক ফরিদ কবির উপস্থিত ছিলেন।