৫ সেপ্টেম্বর সারা বিশ্বে প্রথমবারের মত উদযাপিত ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পাইনাল কর্ড ডে’ বা আর্ন্তজাতিক মেরুদণ্ডে আঘাতপ্রাপ্ত দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে “প্রতিরোধই প্রতিকার” প্রতিপাদ্য নিয়ে এ আলোচনার আয়োজন করে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি)।
আয়োজকরা জানান, পৃথিবীতে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ মেরুরজ্জুতে আঘাতজনিত কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে জীবনযাপন করছেন। অধিকাংশ সময় অসর্তকতা, অজ্ঞতা এবং ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ব্যক্তি মেরুরজ্জুতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
আলোচনায় উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশে মেরুরজ্জুতে আঘাত প্রাপ্তির মূল কারণ উঁচুস্থান থেকে পড়ে যাওয়া, মাথায় অতিরিক্ত ভারী বোঝা বহন ও সড়ক দুর্ঘটনা।
“তাই সমাজে মেরুরজ্জুর আঘাত প্রতিরোধ ও পুনর্বাসনে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জনের জন্য সরকার, সরকারি প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট সেক্টর, গণমাধ্যম, এনজিও, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ এবং সর্বোপরি সর্বসাধারণের অংশগ্রহণের বিকল্প নেই।”
সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, সমাজকল্যাণ সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান, হ্যান্ডিক্যাপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি সাবরীন খান, নিওরো বিশেষজ্ঞ মাযহারুল মান্নান, সেন্টার ফর ডিজঅ্যাবলিটি ডেভেলেপমেন্ট-সিডিডির প্রতিনিধি নাজমুলবারিসহ প্রতিবন্ধী সেবায় নিয়োজিত বেশ কয়েকজন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।
ডা. মাযহারুল মান্নান বলেন, মেরুদণ্ডে আঘাত প্রাপ্ত হওয়ার পর সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না করার কারণে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়। তাই মেরুদণ্ডে আঘাত পরবর্তী যত্ন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
সিআরপির সেবা আরও রোগীবান্ধব করতে এর প্রতিটি ইউনিটে একটি আইসিইউ স্থাপন করা প্রয়োজন বলেও মত দেন তিনি।
সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বতঃস্ফূর্ত জীবন যাপন তাকে নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। যে যার পরিধি থেকে, সাহস থেকে, চেষ্টা থেকে কাজ করে গেলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে।
সিডিডির নাজমুল বারি বলেন, বাংলাদেশের কোনো সরকারি হাসপাতালেই স্পাইনাল কর্ড ইঞ্জুরির যথাযথ চিকিৎসা সেবা নেই, সেই ক্ষেত্রে সিআরপির অবদান অন্যতম। সিআরপি সরকার এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্মিলিতভাবে স্পাইনাল কর্ড ইঞ্জুরি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিতেতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়াও সরকারি ভাবে মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্পাইনাল কর্ডে আঘাতজনিত চিকিৎসার জন্য একটি পৃথক বিভাগ চালুর পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্ট ফর দ্যা রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্য প্যারালাইজ্ড (টিআরপি) চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান। সমমনা প্রতিষ্ঠান সিডাব, এডিডি, হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল, জিআইজেড, সিবিএমসহ আরও কিছু সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।