হোমিও চিকিৎসার বিকাশেও কাজ করছে সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দেশে অ্যালোপ্যাথির পাশাপাশি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির বিকাশেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে এ বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের কাছে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2016, 01:35 PM
Updated : 9 April 2016, 01:35 PM

শনিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথি সম্মেলনের উদ্বোধনীতে বক্তৃতায় দেশের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ায় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রসঙ্গও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেন তিনি।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “দেশের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার বিকাশের লক্ষ্যেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের এই প্রচেষ্টা সফল করতে হলে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে।”

এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‍“বাংলাদেশের সরকার ঘরে ঘরে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যার সুফল জনগণ পাচ্ছে। এই উদ্যোগগুলোকে আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করতে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির পাশাপাশি হোমিওপ্যাথিসহ বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।”

বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস উপলক্ষে ভারতের আয়ুশ মন্ত্রণালয় ও হোমিওপ্যাথিক রিসার্চ কাউন্সিলের সহায়তায় আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথিক সংস্থা ‘লিগা মেডিকোরাম হোমিওপ্যাথিকা ইন্টারন্যাশনালিস’ দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

সম্মেলনের আহ্বায়ক নন্দিনী শর্মার সভাপতিত্বে ভারতের আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ যেসো নায়েক, নেপালের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুশতাক আলম, আয়ুশের সচিব অজিত শারণ, লিগা মেডিকোরাম হোমিওপ্যাথিকা ইন্টারন্যাশনালিসের সভাপতি ডা. রেঞ্জ গ্যালাসি এবং যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া, কানাডা, আর্মেনিয়া, ভারত ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৪টি দেশের হোমিওপ্যাথি বিশেষজ্ঞরা সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলনে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়, রেজিস্ট্রারার ডা. জাহাঙ্গীর আলমসহ দেশের বিশেষজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরা অংশ নেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিসহ স্বাস্থ্যখাতের সার্বিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে।

“জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য।”

আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম তার বক্তব্যে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাফল্যের কথাও তুলে ধরেন।

“আমরা শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমিয়ে এমডিজি অর্জন করেছি। আমাদের টিকাদান কর্মসূচির আওতায় প্রায় শতভাগ শিশুকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। এখন আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।

“এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্যে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের সকল উপাদানকে সরকার কাজে লাগাতে চায়। এজন্য হোমিওপ্যাথিসহ বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে আমাদেরকে কাজ করতে হবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী যৌথভাবে বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত ও স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।

এদিকে বিকালে মন্ত্রী ‘হোমিওপ্যাথি: গ্লোবাল সিনারিও অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন’ শীর্ষক সেমিনারের সভাপতিত্বে করেন।