চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কমিশনের বরাত দিয়ে সিনহুয়া জানায়, জানসিয়ান কাউন্টির বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তির দেহে জিকা ভাইরাস পাওয়া গেছে।
আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকা সফর করেন। চীনে এটিই জিকা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার প্রথম খবর।
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে গর্ভবতী এক নারীর দেহেও জিকা ভাইরাস সনাক্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে বিবিসি। এখন পর্যন্ত এ নিয়ে এবছর কুইন্সল্যান্ডে তিন জন জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেল। কুইন্সল্যান্ডে সর্বশেষ আক্রান্ত ওই নারী সম্প্রতি বিদেশ সফর করেন। মঙ্গলবার রক্ত পরীক্ষায় তার শরীরে জিকা ভাইরাস ধরা পড়ে।
ওদিকে. চীনে আক্রান্ত ব্যক্তিও সম্প্রতি ভেনেজুয়েলা থেকে হংকং হয়ে চীনের শেনচেনে যান।
চায়না কর্তৃপক্ষ জানায়, মূলত শেনচেনে পৌঁছানোর পর তার শরীরে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। ওই ব্যক্তিকে তার নিজ শহরে একটি হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে।
সিনহুয়া জানায়, তিনি স্বাভাবিকভাবেই সেরে উঠছেন। জিকা ভাইরাসের কোনও টিকা বা চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি।
চায়না কর্তৃপক্ষ এখনই জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। চীনে এখন শীত মৌসুম চলছে। এ সময় মশার উপদ্রব কম থাকে।
ডেঙ্গু রোগের জন্য দায়ী এডিস মশা জিকা ভাইরাস ছড়ায়। এ ভাইরাসে আক্রান্ত কারও মৃত্যুর খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ রোগে মাঝারি মাত্রার জ্বর, মাথা ব্যথা, চোখে প্রদাহ এবং শরীরে সামান্য র্যাশ উঠতে পারে।
কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, জিকা ভাইরাসের সঙ্গে ছোট মাথার শিশু জন্মগ্রহণের সম্পর্ক রয়েছে বলে ধারণা চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের।
যদিও বিষয়টি এখনও প্রমাণিত নয়। কিন্তু গত বছর মে মাসে ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দেশটিতে ছোট মাথার শিশু জন্মগ্রহণের হার মারাত্মক ভাবে বেড়ে গেছে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ রোগকে ‘মাইক্রোসেফালি’ বলে। এ রোগে আক্রান্ত শিশু মাতৃগর্ভে থাকার সময় তার মস্তিষ্কের গঠন সম্পূর্ণরূপে হয় না। ফলে ওই শিশু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী এমন কি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আমেরিকা মহাদেশের অধিকাংশ দেশে জিকা ভাইরাস সনাক্ত হওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। বেশ কয়েকটি দেশ আগামী অন্তত ছয় থেকে আট মাস গর্ভধারণ করা থেকে নারীদের বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
জিকা ভাইরাসের টিকা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা আবিষ্কারের গবেষণা দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।