‘অগ্নি-২’ দিয়েই ঘুরে দাঁড়াবো - ওম

এ পর্যন্ত মাত্র দুটি সিনেমা যোগ হয়েছে তার ক্যারিয়ারে, ভিন্ন ধারার ‘কালিমপঙে সীতাহরণ’ আর বাণিজ্যিক সিনেমা ‘অ্যাকশন’। দুটি সিনেমাই মুখ থুবড়ে পড়েছিল টালিগঞ্জের বাজারে। ওম কিন্তু মুষড়ে পড়েননি। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার সিনেমা ‘অগ্নি-২’ - এর মাধ্যমে নতুনভাবে হাজির হচ্ছেন। বলছেন, এই সিনেমার মাধ্যমেই ঘুরে দাড়াবেন তিনি।

জয়ন্ত সাহাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2015, 01:43 PM
Updated : 14 July 2015, 01:43 PM

সম্প্রতি ‘অগ্নি-২’ সিনেমার প্রচারের কাজে ঢাকা এসেছিলেন টালিগঞ্জের এই চিত্রনায়ক। এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে কথা বললেন গ্লিটজের সঙ্গে।

শুরুতেই তার অনুরোধ, ‘অগ্নি-২’ সিনেমাটি ছাড়া আর কোনো ব্যাপারে যেন তাকে প্রশ্ন না করা হয়।

‘অগ্নি-২’ সিনেমাটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন মাহিয়া মাহি। নায়িকাকেন্দ্রিক সিনেমা হলেও তার অভিনয়ের সুযোগ ছিল বলে জানালেন ওম।

“আমি জানি সিনেমাটি লেডি অ্যাকশন টাইপের। কিন্তু আমার চরিত্রটিতে কিন্তু অভিনয়ের সুযোগ ছিল। চিত্রনাট্যকার আমার চরিত্রটিতেও অভিনয়ের পর্যাপ্ত সুযোগ রেখেছেন। সিনেমাটি দেখলে কখনও মনে হবে না সিনেমাটি কেবল মাহির একার সিনেমা। মাহির পরিপূরক হিসেবে না, আমার চরিত্রটিকেও পরিচালক স্বতন্ত্র্যভাবে উপস্থাপন করেছেন।”

পরিচালকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ওম গ্লিটজকে বললেন, “ইফতেখার চৌধুরী অভিনয়ের দিক থেকে এক চুল ছাড় দেননি। প্রতিটি দৃশ্যে, হোক অ্যাকশন কিংবা গান, পরিচালক প্রতিটি মুহূর্তে পরখ করেছেন। বিশেষ করে অ্যাকশন দৃশ্যগুলোর কথা আলাদাভাবে বলতেই হবে। এত যত্ন নিয়ে তিনি দৃশ্যগুলো ধারণ করেছেন সিনেমাটি না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না।”

মাহির প্রশংসা করতেও ভোলেননি ওম, “মাহি ভীষণ প্রফেশনাল। অবসরে মাহিকে দেখতাম সেটের সবার সঙ্গে দুষ্টুমি করছে। কিন্তু ক্যামেরা ওপেন হওয়ার পর সেই মাহি ভীষণ সিরিয়াস হয়ে পড়ত। প্রতিটি শট ওকে করতে মাহি খুব সিরিয়াসলি কাজ করত। এমন কাজপাগল মেয়ে খুব কম মেলে ইন্ডাস্ট্রিতে। অ্যাকশন দৃশ্যগুলোতে তার অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে। একজন ছেলের পক্ষে যেসব দৃশ্যে অভিনয় করা রীতিমতো কষ্টকর, মাহি সেসব দৃশ্যে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে।”

 ঈদ-উল-ফিতরে বাংলাদেশে মুক্তির পরই ভারতে মুক্তি দেওয়া হবে ‘অগ্নি-২’ সিনেমাটি।

“টালিগঞ্জের বাণিজ্যিক সিনেমার সঙ্গে ঢাকাই সিনেমার খুব একটা তফাৎ নেই। সিনেমা কেমন হবে তা নির্ভর করছে পরিচালকের চিন্তাধারার সঙ্গে। আমার মনে হয়, ওপার বাংলার বাণিজ্যিক সিনেমার সঙ্গে এপারের সিনেমার অনেক মিল রয়েছে। সিনেমাটি মৌলিক গল্পে নির্মিত হয়েছে। টালিগঞ্জ সিনেমার দর্শক কিন্তু মৌলিক গল্পের সিনেমাগুলোকে বেছে নেয়।”

ওম জানালেন, ‘অগ্নি-২’ এর পর আরও বেশ কটি ঢাকাই সিনেমাতে অভিনয়ের কথা রয়েছে তার। কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়নি বলে সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে চাননি তিনি।

নিজের উত্থানের গল্পও শোনালেন, “নায়ক হতে কম কাঠখড় পোড়াই নি। আজ থেকে ১৩ বছর আগের কথা। ২০০৩ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে আমি স্বপ্ন নিয়ে পা রেখেছিলাম ইন্ডাস্ট্রিতে। টিভি নাটক, সিনেমাতে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছি প্রচুর। বেশ কটি সিনেমাতে ব্যাকড্রপ ড্যান্সার হিসেবে কাজ করেছি। আমি কোনো দিন হতাশ হইনি। লেগেছিলাম স্বপ্নের পেছনে, আমি নায়ক হবোই হব। একদিন সেই সুযোগ এল। সবে শুরু হল আমার মিশন। আমি জানি পথ অনেক কঠিন। কিন্তু আমি হাল ছাড়বো না।”
 

‘অগ্নি-২’ সিনেমাটি সফল না হলেও ওম কাজ করতে চান ঢাকাই সিনেমাতে। ঢাকাই সিনেমার প্রতি এই ভালো লাগার কারণ হিসেবে ওম বলেন, “ভারতের মানুষের ভাষা, আচার-ব্যবহার, প্রকৃতি অনেক কিছুই বাংলাদেশের মতো। এখানে আমি কাজ করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব।”

তিনি জানালেন, বাংলাদেশে বেশ কজন বন্ধুবান্ধব রয়েছে তার। তাদের কাছেই শুনেছেন বাংলাদেশের গল্প। তবে গল্পের বাংলাদেশ আর চোখের দেখা বাংলাদেশের মধ্যে বিস্তর তফাৎ। এবারের সফর মাত্র দুদিনের, পরে এসে তাই ভালভাবে পরখ করে নিতে চান।