‘মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক, মনগড়া’ বক্তব্য মুদ্রন ও প্রচারের দায়ে চিত্রপরিচালক সোহানুর রহমান সোহান এবং মুশফিকুর রহমান গুলজারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।দেশে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ইস্যুটি এর আগে ২০১২ সালেও মামলা পর্যন্ত গড়ায়। ওই মামলার কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে।
দেশের সিনেমা হলগুলোয় ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের পক্ষে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি, অপরদিকে এর বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির অবস্থান। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিঞা আলাউদ্দিনের দায়ের করা মানহানি মামলার প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত অভিযুক্ত চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান ও মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজারের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। এতে রোববার সোহান ও গুলজারকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্র আমদানি ইসুতে চলচ্চিত্র পরিচালকদের সঙ্গে চলচ্চিত্র প্রদর্শকদের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় চলতি বছর জানুয়ারিতে। ভারতীয় হিন্দি সিনেমা ‘ওয়ান্টেড’ বেশক’টি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হলে তাকে ‘ঢাকাই চলচ্চিত্র ধ্বংসের পায়তারা’ হিসেবে বর্ণনা করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের ব্যানারে জোর আন্দোলন শুরু করে তারা।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, চলতি বছর ২৭ জানুয়ারি ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যজোট নেতা গুলজার চলচ্চিত্র প্রদর্শকদের ‘চোর, বিদেশী দালাল ও রক্তচোষা’ বলে আখ্যায়িত করেন। গণমাধ্যমকেও তিনি নিজ স্বাক্ষরিত চিঠি সরবরাহ করেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, তার এই বক্তব্য ও চিঠিকে “মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক, মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানহানিকর” বলে অভিযোগ করেছে প্রদর্শক সমিতি। বাদীপক্ষ বলছে, আসামিরা ইচ্ছা করেই বাদীকে ‘হেয়প্রতিপন্ন’ করার পাশাপাশি তাদের ‘সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন’।
মিঞা আলাউদ্দিন গ্লিটজকে বলেন, “যারা ভারতীয় সিনেমা আমদানির বিরুদ্ধে গলাবাজি করছেন, তাদের ঘরেই কিন্তু ভারতীয় সিনেমার চ্যানেলগুলো চলছে। আগে তারা সেইসব চ্যানেল দেখা বন্ধ করুন।”
"এসব সিনেমা হলে প্রদর্শিত হলে দর্শক বুঝে যাবে, আমাদের পরিচালকদের কীর্তি।” পুরনো হিন্দি সিনেমা আমদানিতে দেশের চলচ্চিত্র কতটা লাভজনক হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা হিন্দির পাশাপাশি বাংলা সিনেমাও রপ্তানি করেছি। প্রক্রিয়াটি শুরু করেছি। এখন চেষ্টা করছি, যে সিনেমাটি আমরা রপ্তানি বা আমদানি করব তা যেন একইযোগে বাংলাদেশ ও ভারতে মুক্তি পায়।”
অভিযুক্ত গুলজার ও সোহানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল গ্লিটজ। তারা দুজনই বলেছেন, “বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জবাব দেব আমরা। এখনই কিছু বলতে চাই না।”