সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অনুদানের জন্য ‘সংযোগ’ শিরোণামে একটি চিত্রনাট্য জমা দিয়েছিলেন তিনি, যা বাছাই কমিটির মূল্যায়নে শীর্ষে থাকলেও অনুদান কমিটির চুড়ান্ত প্রস্তাবনায় বাদ পড়ে যায়।
আবু সাঈয়ীদ বলেন, “বাছাই কমিটির মূল্যায়নকে বিবেচনাতেই আনেনি অনুদান কমিটি। তাদের এই সিদ্ধান্ত আমার কাছে বিস্ময়কর, হতাশাজনক ও রহস্যময়ও বটে। আমি মনে করি ‘সংযোগ’কে চুড়ান্ত বিবেচনায় না আনার ক্ষেত্রে এক বা একাধিক ব্যক্তির অসৎ উদ্দেশ্য কাজ করতে পারে।”
ছয়টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী নির্মাতা সাঈয়ীদ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর সাফল্য তুলে ধরে হতাশার সুরে বলেন, “এরপরেও কি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য আমার সক্ষমতা প্রমান করতে হবে?কোনো ব্যাক্তি বিশেষের করুণার জন্য মুখ চেয়ে থাকতে হবে?
তিনি আরও বলেন, অনুদানের নীতিমালা ও নির্বাচন প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ ও পক্ষপাতদুষ্ট। অনুদানপ্রাপ্তরা ‘সরকারি টাকার শ্রাদ্ধ’ করছেন কি না তাও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
“যদি দেখতাম প্রতি বছর অনুদানের টাকায় ভাল ভাল সিনেমা নির্মিত হচ্ছে, অনুদানের টাকা যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে, তাহলে অনুদান পাওয়া না পাওয়া নিয়ে কোনো বক্তব্যই আমি রাখতাম না। কিন্তু এখন দেখছি অনুদান পেয়েও অনেক নির্মাতাই চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন না। অধিকাংশ চলচ্চিত্রের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। অনুদান প্রদানের পর চলচ্চিত্র নির্মাণ ও এর মান নিয়ে মনিটরিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় তো আর চুপ করে বসে থাকতে পারি না।”
চলচ্চিত্র অনুদান কমিটিকে ইতোমধ্যে তিনি মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
১৯৮৯ সালে মুক্তি পায় আবু সাঈয়ীদ পরিচালিত প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ধূসর যাত্রা’। এরপর তিনি ‘আবর্তন’ নামে আরও একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রই জাতীয় পুরস্কার পায়। এরপর তিনি নির্মাণ করেন পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘কিত্তনখোলা’, ‘শঙ্খনাদ’, ‘নিরন্তর’, ‘বাঁশি’, ‘রুপান্তর’, ‘অপেক্ষা’। ‘কিত্তনখোলা’ চলচ্চিত্রটি ২০০০ সালে শ্রেষ্ঠ পরিচালকসহ ৯টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। ‘শঙ্খনাদ’ চলচ্চিত্রটি ২০০৪ সালে দুটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পায়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হওয়া ছাড়াও সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পায় ‘শঙ্খনাদ’।