যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ‘হোক প্রতিবাদ’

পহেলা বৈশাখে নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের নারী শিল্পীরা। এসব ঘটনাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ দাবি করে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2015, 12:33 PM
Updated : 18 April 2015, 12:33 PM

শনিবার বিকালে ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনে আহুত এক মানববন্ধনে এসে শিল্পীরা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করতে না পারলে অবস্থান ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

শিল্পীরা স্লোগান তোলেন, “তারুণ্য আরও একবার রুখে দাঁড়াও এই শহরে পুরুষ নামের নপুংশকদের বিরুদ্ধে, নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে। হোক প্রতিবাদ।”

বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজনে যোগ দিয়ে বেশ কয়েক জন নারী নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। এই ধারাবাহিকতায় অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি তার সহঅভিনেতা ও অভিনেত্রীদের প্রতি একটি মানববন্ধনের ডাক দেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে তারকারাও প্রতিবাদ জানাতে হাজির হন প্রেস ক্লাবের সামনে।

শনিবারের মানববন্ধনে এসে সাবেক সাংসদ ও অভিনেত্রী তারানা হালিম বলেন, “পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতি তথা বাঙালি চেতনার অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে এমন ন্যাক্কারজনক হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সরকারকে এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। এই ঘৃণ্য অপরাধীদের সবাইকে চিহ্নিত করতে হবে। নারী নিপীড়কদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই আমি।”

অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন দায়ী করলেন সেদিন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরকে।

“সেদিন পুলিশ বাহিনি বেশ কজন উৎপীড়ককে লাঠিপেটা করেছে। কিন্তু ঘটনা ঘটার সময় তারা নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন। এই ঘটনাকে আমার পূর্বপরিকল্পিত বলেই মনে হয়। দোষীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।”

হয়রানির শিকার নারীদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা সাহসী তরুণদের প্রশংসা করে শাওন বলেন, “যারা সেদিন নারীদের রক্ষা করতে এসেছেন, নারীদের সম্ভ্রম বাঁচাতে নিজেরা মার খেয়েছেন তারা আমাদের ভাই, আমাদের বন্ধু। আমরা সবাইকে নিয়ে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।”

অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার বলেন, “এমন জঘন্য অপরাধের প্রতিবাদের ভাষা আমার জানা নেই।এ ধরনের বর্বরতা কোনোভাবেই সভ্যতার নিদর্শন নয়। আমার মতে, এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যুদণ্ড।”

সিনিয়র অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চু জানালেন ‘হোক প্রতিবাদ’ কার্যক্রম শুধু মানববন্ধনেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। যতদিন পর্যন্ত সরকার দোষীদের খুঁজে বের করতে না পারবে ততদিন অবধি প্রতিবাদ জানিয়েই যাবেন তারা।

এ প্রতিবাদে আরও সামিল হয়েছিলেন অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী, শাহরিয়ার নাজিম জয়,মাজনুন মিজান, কল্যাণ কোরাইয়া, অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, সাবেরী আলম, সানজিদা প্রীতি, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী শর্মিমালা, রুনা খান, পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী, ডিজাইনার বিপ্লব সাহা, কৌতুকাভিনেতা জামিল হোসেনসহ আরও অনেকে।