সব অভিযোগ মিথ্যা: সালমান খান

গাড়ি দুর্ঘটনা মামলায় শুক্রবার আদালতে হাজির হলেন সালমান খান। শুনানিতে হিন্দি সিনেমার এই অভিনেতা বললেন তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি দাবী করেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন না এবং মাতালও ছিলেন না।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2015, 10:23 AM
Updated : 28 March 2015, 11:50 AM

অতিরিক্ত সেশন বিচারক ডি ডাব্লিউ দেশপান্ডের উপস্থিতিতে নিজের জবানবন্দি দেন ৪৯ বছর বয়সী এই অভিনেতা। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা।”

সালমান আরও জানান, সে দুর্ঘটনার সময় তার গাড়ির চালক আশোক সিং গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে মুম্বাইয়ের বান্দ্রা এলাকায় আমেরিকান এক্সপ্রেস বেকারির সামনে সালমানের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতে ঘুমন্ত মানুষের উপর উঠে যায়। এ ঘটনায় দুজন মারা যান এবং দুজন আহত হন।

শুক্রবারের শুনানিতে তিন ঘণ্টা ধরে সালমানকে চারশরও বেশি প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। মামলার বাদি ও বিবাদি পক্ষের আইনজীবিরা উপস্থিত না থাকায় বিচারক দেশপান্ডে নিজেই সালমানকে জেরা করেন।

বিচারপতি সালমানকে প্রশ্ন করেন, “আপনার দেহরক্ষী রাভিন্দ্র পাতিল বলেছেন, আপনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন এবং আপনার বন্ধু কামাল খান ঐ সময় গাড়ির পেছনের আসনে বসে ছিলেন। আপনার এ ব্যাপারে কি বলার আছে?”

সালমান খান এ প্রশ্নের উত্তরে সাবলীল ভাবেই বলেন “সব মিথ্যা।”

বাদি পক্ষের আইনজীবিরা বার বারই প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন সালমান মদপ্য অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আরও বলা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান সালমান এবং এ সময় তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্সও দেখাতে পারেননি।

সালমান এর সবই অস্বীকার করে বলেন, “আমি কোনোভাবেই মদ্যপান করিনি।”

তিনি আরও বলেন, সেদিন জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেলের রেইন বারে তিনি কেবল পানি পান করেছিলেন। দুর্ঘটনা ঘটার আগে তিনি ভাই সোহেল খান এবং কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে সেখানে যান।

মুন্নু নামের একজনের সাক্ষ্যও অস্বীকার করেন সালমান। এই সাক্ষী বলেন, তিনি সালমানকে গাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ে যেতে দেখেছেন।

তিনি বালা শঙ্কর নামে আরও একজনের সাক্ষ্যও মিথ্যা বলে দাবি করেন। বালা শঙ্কর জানিয়েছিলেন, সালমানের রক্ত পরীক্ষা করে তিনি সে সময় ৬২ শতাংশ অ্যালকোহলের উপস্থিতি পেয়েছিলেন, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।

সালমান বলেন, বালা শঙ্কর কোন রসায়ন বিশ্লেষক নন এবং সালমানের রক্ত পরীক্ষায় তিনি সুপারিশকৃত পন্থাও অনুসরণ করেননি।

বিচারক যখন সালমানকে জিজ্ঞেস করেন, দুর্ঘটনার সময় তিনি গাড়ির ডান দিকের দরজা দিয়ে বের হয়েছিলেন কি না, সালমান বলেন, “আমি প্রথমে চালকের আসনে বসেছিলাম, কারণ চালক আলতাফ চলে গিয়েছিল এবং অশোক তখন আসার পথে ছিল। এরপর আমি বাঁ দিকের আসনে চলে যাই। তবে বাঁ দিকের দরজাটি বিকল ছিল, আর তাই আমাকে ডান দিকের দরজা দিয়েই বের হতে হয়েছিল।”

এরপর বিচারক তাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে ব্যার্থ হওয়ার কথা জানালে, এক্ষেত্রেও সালমান তথ্যটিকে মিথ্যা দাবি করেন।  এরপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিলেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে সালমান বলেন, “মিথ্যা... আমি সেখানে ১৫ মিনিট ছিলাম। আমিই চালককে বলি পুলিশে খবর দিতে এবং আহতদের সহায়তা করতে।”

পরে বিচারক তাকে জিজ্ঞেস করেন, তাকে তার আইনজীবির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কি না। সালমান এটিও অস্বীকার করে বলেন, তিনি নিজেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পন করেন।

সাদা শার্ট এবং নীল জিন্স পরে সালমান আদালতে হাজির হন বেলা ১১ টায়। মুম্বাইয়ের গরমে অনাবরত ঘামতে থাকা সালমানকে প্রথমে সাড়ে এগারোটা থেকে দুপুর একটা চল্লিশ এবং পরে দুপুর দুইটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিচারকের জেরার মুখোমুখি হতে হয়।