গ্লিটজ: নাচ, মডেলিং আর অভিনয় তিন মাধ্যমেই সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন। এত কিছু একসঙ্গে কিভাবে?
শখ: উহ, ব্যস্ততা! রাত দেড়টা-দুটো অবধি শুটিং করছি। পরদিনই আরেক পরিচালক ব্রেকফাস্ট টেবিলে শখের জন্য অপেক্ষা করছেন। নিজের জন্য সময় পাওয়া খুব কঠিন। এরই মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে কাজ করতেই হচ্ছে। একটু ব্যালেন্স করে নিতে হচ্ছে আর কি!
গ্লিটজ : গেল বছর মুক্তি পেল আপনার দ্বিতীয় সিনেমা ‘অল্প অল্প প্রেমের গল্প’। এখন নাকি আরও বেশ কটি সিনেমার ব্যাপারে কথা চলছে। এবার কি সত্যিই নিয়মিত হবেন সিনেমাতে?
গ্লিটজ: সিনেমাতে নিয়মিত না হওয়ার বিশেষ কারণ আছে কি?
শখ: মিডিয়াতে সবে কাজ করতে শুরু করেছি। কোনো কিছু ঠিকমতো বুঝে ওঠার আগে আমি এফ আই মানিকের ‘বলো না তুমি আমার’ সিনেমাতে কাজ করে ফেলি। হ্যাঁ, এটা আমার জন্য একটা খুব বড় সুযোগ ছিল। আমি সুযোগটি কোনোভাবে হাতছাড়া করতে চাইনি।
সিনেমাটি যখন করছি, তখন আমি স্কুলে পড়ি। পড়াশোনার চাপ ছিল। তার পাশাপাশি আমি নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে পাকাপোক্ত করতে চেয়েছি।
গ্লিটজ: কি ভাবছেন চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ার নিয়ে?
আমি প্রমাণ করতে চাই, আমি সব ধরনের চরিত্রের জন্যই পারফেক্ট। চ্যালেঞ্জ নিতে আমি প্রস্তুত। আমি এমন সব চরিত্রেই কাজ করতে চাই, যা একেবারে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধিয়ে বসবে।
গ্লিটজ: আপনার কথার সূত্র ধরেই বলি, সিনেমাতে পাকাপোক্ত হতে কি নাটককে বেছে নিয়েছিলেন?
শখ: ব্যাপারটি এমন নয়। আমি যে মাধ্যমেই কাজ করি, আমার লক্ষ্য সে মাধ্যমে নিজের অবস্থান তৈরি করা। বিজ্ঞাপনে নিজের জায়গা তৈরি করে তখন আমি নাটকে নিয়মিত হতে শুরু করেছি। এখন নাটকেও আমার একটি অবস্থান তৈরি হয়েছে। আমার লক্ষ্য, অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের হৃদয়ে ঠাঁই করে নেওয়া। আমি চেয়েছি, বিজ্ঞাপনের মতো আমার অভিনয়ও যেন দর্শক হৃদয় ছুঁয়ে যায়। শুধু নিজেকে প্রমাণের জন্যই আমি নাটককে প্রাধাণ্য দিয়েছি। সিনেমাতে পাকাপোক্ত হতে মোটেই নাটককে বেছে নিইনি আমি।
গ্লিটজ : আপনারা যারা টিভিনাটক থেকে সিনেমাতে নিয়মিত হয়ে উঠতে চাইছেন, চলচ্চিত্রে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
গ্লিটজ: ফিরছি নাটকের কথায়। ধারাবাহিক নাটকের ক্ষেত্রে বরাবরই আপনার অনীহা দেখা গেছে, কেন?
শখ: দেখুন, আমাদের দেশে এতগুলো চ্যানেল। দর্শকের এত সময় কোথায় যে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বসে ওরা একটি টিভি সিরিয়াল দেখবে! তাছাড়া সিরিয়ালের ক্ষেত্রে যেটা হয় একই চরিত্র একইভাবে টেনে নিতে নিতে বিষয়টি এত লম্বা হয়ে যায়, তখন আর ধৈযর্্য থাকে না। দর্শকও বিরক্ত হয়। এর চেয়ে এক ঘণ্টার নাটকেই বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি। এক ঘণ্টার নাটকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে কাজ করে অভিনয়ের জায়গাটা আরও বেশি পাকাপোক্ত করতে চাই।
গ্লিটজ: আপনার বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ, আহ্লাদী চরিত্রে নিয়মিত দেখা যায় আপনাকে। আপনি নিজেই কি এমন চরিত্রে অভিনয় করতে আগ্রহী নাকি পরিচালকরা চাইছে বলেই করছেন?
যত দিন যাচ্ছে, আমি নিজেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। একই ঘরানা থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করছি। নাটকে আমি সবসময়ই চেষ্টা করি, একজন সাধারণ মানুষকে তুলে ধরতে। চাই ন্যাচারাল অ্যাক্টিং করতে।
গ্লিটজ: বিজ্ঞাপনেও নিয়মিত কাজ করছেন। বিজ্ঞাপনকে কতটা প্রাধান্য দিচ্ছেন আপনি?
শখ: আমি তো মনে করি সিনেমা আর বিজ্ঞাপনই মূলত থেকে যায়। আজ থেকে পাঁচ, দশ বছর পরও আমার করা একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে আলোচনা হবে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ করাও সহজ।
তবে বিজ্ঞাপনে কাজ করা চাট্টিখানি কথা নয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনেক ধরনের এক্সপ্রেশন দিতে হয়। এখানে অভিনয়, নাচ সবকিছুই জানতে হয়।
গ্লিটজ : এ মুহূর্তে মডেল হিসেবে কাকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে হয় আপনার?
গ্লিটজ: আপনার বিরুদ্ধে অনেক পরিচালকের অভিযোগ আপনি প্রায়ই শিডিউল ফাঁসান। এ ব্যাপারে আপনার ব্যাখা কী?
শখ: দেখুন একজন আর্টিস্ট একসঙ্গে সব কাজ তো করতে পারেন না। এখন আমাদের আর্টিস্ট ক্রাইসিস রয়েছে। এক শখকে নিয়ে টানা হেঁচড়া করলে শখ তো সবার অনুরোধ রাখতে পারবেন না। এরপর পরিচালকরা যদি বলেন ‘শখ শিডিউল ফাঁসায়’ তবে আমার আর কিছু বলার নাই। শুরুতেই কিন্তু বলেছিলাম, নিজের জন্য সময় পাওয়াই দুষ্কর আমার।
গ্লিটজ: সিনেমাতে নিয়মিত হবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে কি টিভি নাটককে বিদায় বলছেন?
শখ: আমি সিনেমাতে নিয়মিত হতে চাই কিন্তু তাই বলে টিভিনাটকে অভিনয় ছেড়ে দেব, তা তো বলিনি কখনও। দর্শক যখন আমাকে সিনেমাতে নিয়মিত দেখতে শুরু করবে তখন আমি টিভি নাটকে অভিনয় করা কমিয়ে দেব।
গ্লিটজ : শেষ প্রশ্ন। ক্যারিয়ারের শুরুর শখ আর আজকের শখের মধ্যে পার্থক্য কতটুকু?
শখ : সবচেয়ে বড় পরিবর্তন, আমি বড় হয়েছি। ক্যারিয়ারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে শিখেছি। আমি অভিনয় শিখে আসিনি। কাজ করতে করতেই নিজেকে বদলাচ্ছি। নিজেকে একটা অবস্থানে নিয়ে যেতে করণীয় কি, তাই শিখে গিয়েছি আমি। যতই দিন যাচ্ছে, আমার অভিজ্ঞতাও বাড়ছে।