নকল ছেড়ে রিমেইকে বলিউড

হলিউডি সিনেমার গল্প থেকে ‘অনুপ্রাণিত’ হয়ে এতদিন হিন্দি সিনেমা তৈরি হয়েছে প্রচুর।  সেসব সিনেমাকে নকলের কাতারেই ফেলে দেওয়া যায় চোখ বন্ধ করে। তবে ২০১৪ সালে ‘ব্যাং ব্যাং’-এর মাধ্যমে হিন্দি সিনেমায় শুরু হয় আনুষ্ঠানিক রিমেইকের চল। টম ক্রুজ অভিনীত ‘নাইট অ্যান্ড ডে’-এর হিন্দি সংস্করণ তৈরি করেছে হলিউডভিত্তিক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফক্স স্টুডিওজ। ‘ব্যাং ব্যাং’-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আরও আটটি বিদেশি সিনেমার রিমেইক হচ্ছে বলিউডে।

সেঁজুতি শোণিমা নদীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2015, 11:22 AM
Updated : 30 Jan 2015, 11:22 AM

২০১৪ সালেই ফক্স স্টুডিওজের পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছিল ‘দ্য ফল্ট ইন আওয়ার স্টারস’-এর রিমেইকের। হিন্দি সংস্করণটিতে অভিনয়ের জন্য এর মধ্যেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন দিপিকা পাড়ুকোণ ও ভারুন ধাওয়ান।

হলিউডি আরও তিনটি সিনেমা ‘ওকিউলাস’ (২০১৩), ‘ওয়ারিয়র’ (২০১১) এবং ‘ব্যারিড’ (২০১০)-এর হিন্দি রিমেইকের ঘোষণা দিয়েছেন নির্মাতারা। এছাড়াও তিনটি ফরাসি সিনেমা ‘ইনটাচেবলস্’ (২০১১), ‘বিউটিফুল লাইজ’(২০১০) এবং ‘প্রাইসলেস’(২০০৬)- এর রিমেইক তৈরি হবে হিন্দিতে। দক্ষিণ কোরিয়ার সিনেমা ‘দ্য ম্যান ফ্রম নোহয়্যার’ও (২০১০) আছে এই কাতারে।

‘ওকিউলাস’-এর রিমেইকে অভিনয় করবেন হুমা কুরেশি এবং সাকিব সালিম। ‘ওয়ারিয়র’- এর হিন্দি সংস্করণের নাম ‘ব্রাদারস’। সিনেমাটিতে অভিনয় করবেন আক্শায় কুমার এবং সিদ্ধার্থ মালহোত্রা।

ফরাসি সিনেমা ‘বিউটিফুল লাইজ’-এর হিন্দি রিমেইক করছেন রমেশ সিপ্পি । ‘শিমলা মির্চ’ নামের সিনেমাটিতে অভিনয় করছেন হেমা মালিনি, রাজকুমার রাও এবং রাকুল প্রিত সিং। ওদিকে ‘দ্য ম্যান ফ্রম নোহয়্যার’-এর হিন্দি সংস্করণ ‘রকি হ্যান্ডসাম’-এ অভিনয় করবেন জন অ্যাব্রাহাম।

বাণিজ্য বিশ্লেষকেরা বলছেন, রিমেইক হলেও এসব সিনেমায় ভারতীয় প্রেক্ষাপটে কিছু পরিবর্তন আনাটা জরুরি। তাতে করে সৃজনশীলতার ক্ষেত্র বাড়ে।

ট্রেড পণ্ডিত গিরিশ জোহার এ ব্যাপারে বলেন, “যে কোনো আন্তর্জাতিক সিনেমার রিমেইক ভারতীয়দের চাহিদা অনুযায়ী অবশ্যই বিবর্তিত হতে হবে। আর সেখানেই সৃজনশীলতার ব্যাপারটি আসে।”

‘ব্যারিড’ সিনেমাটির রিমেইকের পরিচালক সৌরাভ ভার্মাও এ ব্যাপারে একমত। তিনি বলেন, “আপনি যখন রিমেক তৈরি করছেন, যার মূল সিনেমা সম্পর্কে এর মধ্যেই বাইরের দুনিয়া সবকিছু জানে, কিন্তু ভারতের প্রেক্ষাপটেও যার গল্প প্রাসঙ্গিক, তখন সিনেমাটিকে অবশ্যই ভারতের মতো করেই তৈরি করতে হবে। মূল সিনেমার চেয়ে সিনেমাটি যদি কিছুটা ভিন্ন হয়, সেটা বরঞ্চ দর্শকদের আরও বেশি উৎসাহিত করবে।”

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, সিনেমার স্বত্ত্ব নিয়ে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায়, ভারতীয় নির্মাতারা এখন নকলের পরিবর্তে স্বত্ত্ব কিনে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবেই রিমেইক করাটাকে শ্রেয় মনে করছেন।

এ ব্যাপারে বাণিজ্য বিশ্লেষক কোমাল নাহতা বলেন, “বিদেশি প্রযোজনা সংস্থাগুলো এখন তাদের সিনেমা নিয়ে খুবই সতর্ক। তাছাড়া, বেশ কিছু বড় বড় হলিউডি প্রতিষ্ঠান তাদের সিনেমার নকল করা ভারতীয় নির্মাতাদের বিরূদ্ধে মামলা করায়, প্রযোজকেরা এখন বেশ ভয় পেয়ে গেছে। তারা এখন নকলের চেয়ে স্বত্ত্ব কিনে সিনেমা বানিয়ে ঝামেলা এড়ানোটোকেই শ্রেয় মনে করছেন।”