রোববার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।
শুক্রবার ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘ওয়ান্টেড’ মুক্তি পেলে চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের কর্মীরা বিভিন্ন হলে গিয়ে ‘ওয়ান্টেড’ এর পোস্টার ছিড়ে ফেলে এবং প্রদর্শনী শুরুর আগে দর্শকদের হলে ঢুকতে বাধা দেয়। এ ঘটনাকে ‘সিনেমা হলে নেক্কারজনক আক্রমন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের নেতা শাকিব, মিশা, সোহান এবং গুলজারদের ব্যাপারে প্রদর্শক সমিতির নির্বাহী কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান সাইফুল।
ঐক্যজোটের ব্যানারে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে তারা বলছেন, “যারা সিনেমা হলগুলোতে আক্রমনে অংশ নিচ্ছেন তাদের শতকরা পাঁচজনও পরিচালক বা শিল্পী নন, এরা বহিরাগত। এই বেতনভোগীরা এখন আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করছেন।”
ভারতীয় সিনেমা আমদানি করে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে চাঙ্গা করা সম্ভব কি না - সাংবাদিকদের এমন একটি প্রশ্নের জবাবে সমিতির সহ-সভাপতি সুদীপ্ত বললেন, “নির্দিষ্ট পরিমাণে ভারতীয় সিনেমার পাশাপাশি বাংলাদেশের সিনেমা প্রদর্শিত হলে দেশীয় সিনেমার মান বাড়বে। একই সঙ্গে হলের দর্শক সংখ্যা ও প্রযোজক—পরিবেশকদের আয় বৃদ্ধি পাবে, স্থানীয় বাজার সম্প্রসারিত হবে।”
একইসঙ্গে তিনি দাবি করছেন, “ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শিত হলে দেশীয় চলচ্চিত্রে মেধাসম্পন্ন ও উন্নত কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন পরিচালক ও শিল্পী-কলাকুশলীদের আগমন ঘটবে। যার মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্র যে কোনো দেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার যোগ্যতা অর্জন করবে।”
"আইনি কাগজপত্র নকল করে ও হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে আমদানিকারকরা ভারতীয় সিনেমা আমদানি করছে” - ঐক্যজোট নেতা পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্লিটজের এক প্রশ্নের জবাবে সাইফুল ইসলাম চৌধূরী জানান, তারা ‘বৈধ’ ঋণপত্র এবং এর অনুকূলে হাইকোর্টের নির্দেশনা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতিপত্র প্রদান করে ২০১২ সালের ৩০শে জুন চারটি সিনেমা আমদানি করেছেন। এক্ষেত্রে তারা কোনো ‘ছলচাতুরি’ করেননি বলে দাবি করছেন।
সাইফুল তাদের দাবির পক্ষে আইনি কাগজপত্র সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, ১৯৭৭-৭৮ সালের দিকে এসে বোম্বের সিনেমার ভিডিও ক্যাসেট কিংবা পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে ভারতীয় সিনেমা দেখে এসে পরিচালকরা ক্ষেত্র বিশেষে ‘অবিকল নকল’ সিনেমা নির্মাণের ধারা শুরু করেন। ১৯৯২-৯৩ সালে আকাশ সংস্কৃতি উন্মুক্ত হয়ে পড়ায় স্যাটেলাইট চ্যানেল সহজলভ্য হয়ে গেলে সিনেমা হলে দর্শকের সংখ্যা কমতে থাকে, উল্লেখযোগ্য হারে কমতে থাকে সিনেমা হলের সংখ্যা। সিনেমার আয় কমতে থাকায় সিনেমা নির্মাণের সংখ্যাও কমতে থাকে।
এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সাইফুল বলছেন, “স্যাটেলাইট চ্যানেলের মাধ্যমে ছোট পর্দায় দেখা হিন্দি সিনেমার বাংলাদেশি সংস্করণ দেখতে দর্শক কেন হলে আসবে!”
তখন বাংলা চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে প্রদর্শক সমিতি হিন্দি চলচ্চিত্র প্রদর্শনকারী ভারতীয় চ্যানেলগুলো বন্ধ করতে সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। সরকার তাদের আবেদনে সাড়া না দিলে তারা আদালতে রিট আবেদনও করেন।