'পুরো দুনিয়া রুবেলের পক্ষে'

বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে চিত্রনায়িকা হ্যাপীর করা মামলা নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বেশ সরগরম। সম্প্রতি রেডিওতে প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে হ্যাপি বললেন, সবাই রুবেলের পক্ষে আর তিনি একাই লড়ছেন। 

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2014, 11:18 AM
Updated : 22 Dec 2014, 11:18 AM

রোববার রাত ১১টায় ঢাকা এফএম - এর বিশেষ অনুষ্ঠান ‘অন্ধকারের গল্প’তে সাধারণ একটি মেয়ে থেকে চিত্রনায়িকা হওয়ার গল্পের পাশাপাশি রুবেলের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন এই অভিনেত্রী।

হ্যাপী বলছেন, “এখন পুরো দুনিয়া রুবেলের পক্ষে বলছে। পুরো ঘটনায় আমাকে দোষারোপ করছে সবাই। লড়াইটি যেন আমার একার। আমি থেমে যাবো না। আমি একাই লড়ে যাব।”

“রুবেল আমার সঙ্গে নয় মাসের একটি ম্যাচ খেলেছে শুধু। ও কখনো আমাকে ভালোবাসেনি। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক গড়াই ছিল আমার জীবনে বড় ভুল।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তাকে উদ্দেশ্য করে অনেকেই ‘আজেবাজে’ মন্তব্য করছেন এমনটা জানিয়ে হ্যাপি বলেন, “এখনও ফরেনসিক রিপোর্ট আসেনি পুলিশের হাতে। প্রতিবেদন সম্পর্কে কিছু না জেনে আমার সম্পর্কে মন্তব্য করবেন না। একবার নিজেকে আমার অবস্থানে চিন্তা করুন তো। নিজের মতো করে ভাবুন।”

“আমি কখনও ভাবি নি রুবেল আমার সঙ্গে প্রতারণা করবে। ওকে ভালোবেসে আমি এমন ঘোরের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম কোনটি সত্যি, কোনটি ভুল, বোঝার মতো অবস্থায় আমি ছিলাম না। রুবেলকে আমি প্রচণ্ড ভালোবেসে ফেলেছিলাম। অথচ এ ভালোবাসাই আমার জীবনে কাল হয়ে এসেছিল।”

হ্যাপী আরও জানান, তার পরিবারের তরফ থেকে গোড়া থেকেই আপত্তি জানানো হয়েছিল এ সম্পর্কের ব্যাপারে।

“আমাদের পরিবার খুব রক্ষণশীল। আমাদের পরিবারে ব্যাপারটি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিল না। আমিও মাকে একবার কথা দিয়েছিলাম রুবেলকে আমি ভুলে যাব। কিন্তু তা আর করি নি।”

পরিবারের সদস্যদের প্রতি ‘অন্যায়’ করেছেন মন্তব্য করে হ্যাপি জানান, মামলা দায়েরের পরই তার পরিবার সবকিছু সবিস্তারে জেনেছে। আরও বলেন, এখন তার পরিবারও তার পাশে নেই।

হ্যাপী বলছিলেন, রুবেলের কথায় তিনি চেনা মানুষদের কাছ থেকে নিজেকে ক্রমাগত গুটিয়ে নিচ্ছিলেন। সম্পর্কের শুরু রুবেলের দাবীতে বন্ধুমহল এমনকি চলচ্চিত্রে নিজের ক্যারিয়ার থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। হ্যাপী তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসেও লিখেছিলেন, “বিদায় চলচ্চিত্র”।

হ্যাপী আরও দাবী করেন, সম্পর্কের শুরু থেকেই রুবেল একাধিকবার তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

“বিয়েটাই শুধু হয়নি আমাদের। আমরা দুজনেই স্বামী-স্ত্রীর মতো করে থাকতাম। আমি তো নিজেকে ওর বউ বলেই ভাবতাম। রুবেলও আমাকে বউ বলে ডাকত মাঝেমধ্যে।”

হ্যাপী আরও বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তাদের সম্পর্কে তিক্ততা চলে এসেছিল। পরিবারের তরফ থেকে বাগেরহাটের একটি মেয়ের সঙ্গে রুবেলের বিয়ে ঠিক করা হলে তিনি হ্যাপীকে জানিয়ে দেন, পরিবারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন তিনি।

হ্যাপীর দাবী, তিনি রুবেলের বাসায় সর্বশেষ গিয়েছিলেন ১লা ডিসেম্বর রাতে। সেখানে গিয়ে ‘মদ্যপ’ রুবেলের বাসায় দুজন অচেনা মেয়েকে দেখে ‘ক্ষিপ্ত’ হয়ে ওঠেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বোতল ভেঙ্গে নিজের হাত কাটতে ‘উদ্যত’ হয়েছিলেন। তখন রুবেলের এক বন্ধু তাকে ঠেকান। এ ঘটনায় রুবেল উত্তেজিত হয়ে হ্যাপীকে একাধিকবার ‘থাপ্পড়’ মারেন বলেও অভিযোগ করেন। সে রাতে অসুস্থ অবস্থায় রুবেলের বাসাতেই ছিলেন বলেও দাবী করেন।

হ্যাপী বলেন, “১লা ডিসেম্বর রাতে এমন কিছু খারাপ ঘটনা ঘটেছে আমার সঙ্গে, তার প্রেক্ষাপটেই আমি মামলা করতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। তারপর ১২ই ডিসেম্বর তো রুবেল বলেই দিল, সে আমাকে আর ভালোবাসে না। আমি তখন মামলাটি দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম।”

আদালতের প্রতি ‘পূর্ণ আস্থা’ রয়েছে জানিয়ে হ্যাপী বলেন, “আমি তো জানি আমার সঙ্গে কি ঘটেছে, কে আসলে দোষী। আমি জানি আদালতের রায়ে রুবেলের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

‘অন্ধকারের গল্প’ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ইভান। প্রযোজনা করেছেন সাদেক সামি।