হ্যালোউইনের সিনেমা

মৃতের স্মরণে পশ্চিমা বিশ্বে যে দিনটি বেশ ঘটা করেই উদযাপিত হয় সেটি হলো হ্যালোউইন। খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বীদের উৎসব হলেও হ্যালোউইন এখন সার্বজনীন। হ্যালোউইনের সঙ্গে হরর সিনেমাটা যায় বেশ।হ্যালোউইনের সন্ধ্যা কাটাতে ভুতের সিনেমার চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না। আর তাই তুলে ধরা হচ্ছে ১০টি জমজমাট হরর সিনেমার কথা। 

শরীফুল হক আনন্দবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2014, 02:43 PM
Updated : 31 Oct 2014, 02:56 PM
হাউজ অফ ওয়ান থাউজেন্ড কর্পসেস (২০০৩)

টেক্সাসে বহু বছর আগে ঘটে যাওয়া কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য খুঁজতে বের হয় তরুণ এক উৎসুক দম্পতি। বিধি বাম, শেষ পর্যন্ত তাদেরকেই পড়তে হয় এক ভয়াবহ সিরিয়াল কিলারের খপ্পরে। রব জোম্বি পরিচালিত সিনেমাটি অবশ্য প্রাপ্তবয়স্ক ও সবল হৃদয়ের অধিকারীদের জন্যই। কেননা সিনেমার অতিরিক্ত রক্তপাত সকলের সহ্য নাও হতে পারে।

স্লিপি হলো (১৯৯৯)

পরিচালনায় টিম বারটন আর অভিনয়ে জনি ডেপ- সিনেমাপ্রেমীদের জন্য এই দুটি নামই যথেষ্ট। এই পরিচালক-অভিনেতা জুটির দারুণ সব সিনেমার মধ্যে 'স্লিপি হলো' কিছুটা অন্যরকমই বটে। মার্কিন লেখক ওয়াশিংটন আরভিং এর ছোট গল্প সেলুলয়েডের ক্লাসিক হরর হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এই দুই গুণী তারকার হাত ধরেই। সিনেমাতে ভৌতিক আবহটা যেরকম আছে, সেই সঙ্গে আছে রোমান্স এবং কমেডির মিশেলও। সাফল্যের ঝুলিতে একটি অস্কারও আছে সিনেমাটির।

হ্যালোউইন (১৯৭৮)

বর্তমান সময়ের ‘স’ কিংবা ‘ফাইনাল ডেস্টিনেশন’ সিনেমাগুলো মূলত অনুপ্রাণিত হয়েছে এই হ্যালোউইন সিনেমাটি থেকেই। স্ল্যাশারধর্মী হরর সিনেমার যাত্রাও শুরু এই হ্যালোউইন থেকে। ছোটবেলা থেকে সিরিয়াল কিলার হিসেবে গড়ে তোলা এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে এগোয় সিনেমার গল্প। আর স্ল্যাশারধর্মী হওয়ায় সিনেমায় সহিংসতা এবং রক্তপাতের পরিমাণটা একটু বেশিই। 

দ্য চ্যালেঞ্জিং (১৯৮০)

একটি ভূতুড়ে বাড়ি আর সেই বাড়িতে থাকা এক অতৃপ্ত আত্মা- হরর সিনেমার আদি গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। গল্প পুরনো হলে কি হবে কিংবদন্তী পরিচালক মার্টিন স্করসেজির প্রিয় সিনেমার তালিকায় রয়েছে এটি।

দ্য অ্যামিটিভিল হরর (১৯৭৯)

অভিশপ্ত এক বাড়িতে নতুন এক দম্পতির প্রতিদিনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে সিনেমাটির গল্প। সমালোচকদের কাছে খুব একটা ভীতিকর মনে না হলেও এই সিনেমার ছাপ রয়েছে হাল আমলের অনেক হরর সিনেমার ওপর। এমনকি সিনেমাটির রিমেইকও হয়েছে বেশ কয়েকটি, বের হয়েছে সিকুয়ালও। একটি অস্কার মনোনয়নও রয়েছে সিনেমাটির ঝুলিতে। 

পেট সেমেটেরি (১৯৮৯)

হররের রাজা স্টিফেন কিং এর উপন্যাসের ওপর নির্মিত সিনেমাটি। অনেক বছরের পুরনো এক গোরস্থান, যেখানে দাফন করা হলে ফিরে আসবে আপনার প্রিয় পশু এমনকি আপনার কোনো প্রিয়জনও। তবে ফিরে আসা পশু কিংবা ব্যাক্তিটি আর আগের মতো থাকবে না। অসাধারণ এই সিনেমাটি হরর আর থ্রিলারের এক রোমাঞ্চকর মিশেল।

পোলটারগাইস্ট (১৯৮২)

স্টিভেন স্পিলবার্গ আর ভূতুড়ে গল্প? 'পোলটারগাইস্ট' সিনেমাটির চিত্রনাট্য কিংবদন্তী এই পরিচালকেরই লেখা। পুরো এক পরিবারকে গ্রাস করে ফেলে এক অভিশপ্ত বাড়ির ভুতেরা। সমালোচক ও দর্শক - দুই মহলেই সিনেমাটি সমাদৃত হয়। অস্কার আসরে সে সিনেমাটি ছিল সেরার তালিকায় প্রতিদ্বন্দ্বী।  তিনটি অস্কার মনোনয়ন জুটেছিল সিনেমাটির সাফল্যের খাতায়।

প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটি (২০০৭)

এ সময়ের জনপ্রিয় হরর সিরিজগুলোর মধ্যে অন্যতম 'প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটি'। ২০০৭ এ সিরিজের প্রথম সিনেমা বের হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বের হয়েছে এর চারটি সিকুয়াল। হরর সিনেমার দৃশ্যায়ন ও বয়ানের ধারাই পাল্টে দিয়েছে সিনেমাটি। প্রতিটি পর্বেই সাধারণত একটি পরিবারকে দেখানো হয় যারা বিভিন্ন ভৌতিক কর্মকাণ্ডের শিকার হয়। কিন্তু সিনেমাগুলো এমনভাবে চিত্রায়িত যেন এগুলো সত্যি ঘটনা আর এ বিষয়টিই দর্শকদের ভয়ে শিউরে উঠতে বাধ্য করবে। 

জু-অন: দ্য গ্রাজ (২০০২)

কেবল মার্কিন নয় জাপানী হরর সিনেমারও বেশ খ্যাতি রয়েছে। জাপানের ‘জু-অন: দ্য গ্রাজ’ ক্লাসিক হরর সিনেমার তালিকায় জায়গা পোক্ত করে নিয়েছে। অতৃপ্ত এক আত্মার জিঘাংসার গল্প উঠে এসেছে সিনেমাটিতে।

ইভিল ডেড (২০১৩)

১৯৮১ সালে সিনেমাটি প্রথম বের হয়। এরপর এর রিমেইক করা হয় ২০১৩ সালে। স্পেশাল ইফেক্টেসের ব্যবহার সিনেমার ভৌতিক আবহকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। পাঁচ বন্ধু একটি পুরনো কেবিনে খুঁজে পায় ‘বুক অফ দ্য ডেড’। আর সেটির মাধ্যমেই তারা মুখোমুখি হয় ভয়ঙ্কর সব অশুভ শক্তির। ‘টেক্সাস চেইনস ম্যাসাকার’ থেকে অনুপ্রাণিত সিনেমাটির কাহিনি অনেক সাহসী মানুষকেও ভয় পাইয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।