হঠাৎ করেই আমাল আমালুদ্দিনের সঙ্গে বাগদান এবং তার পাঁচ মাসের মাথাতেই বিয়ে - পুরো দুনিয়াতে হৈ চৈ ফেলবে সেটা অনুমেয়। ‘ভাগ্যবতী আমাল বাগিয়ে নিলেন হলিউডের তারকা ব্যাচেলরকে’- এরকম শিরোনাম দিয়ে যখন হরদম খবর ছাপা হচ্ছে তখন অনেকটা আড়ালেই চলে যাচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ আইনজীবিদের একজন হিসেবে ব্যক্তি আমালের অর্জনগুলো।
আমাল আলামুদ্দিনের জীবনের দিকে এক নজর তাকালেই যে কেউ বলবেন, এই বিয়েতে ‘ভাগ্যবান’ মানুষটি আসলে ক্লুনিই। বিশ্বের ‘সেরা আবেদনময় পুরুষদের একজন’ তার বর্তমান বঁধুকে পটানোর জন্য একবার বলেছিলেন "তুমি বিশ্বের সেরা ‘আবেদনময়ী’ আইনজীবি"। কিন্তু আমাল কি শুধুই ‘আবেদনময়ী’?
লেবানিজ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ আইনজীবি আমালের জন্ম ১৯৭৮ সালে বৈরুতে। সেখানে মার্কিন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন তার বাবা। আর মা ছিলেন আরব বিশ্বের প্রভাবশালী পত্রিকা আল-হায়াতের সাংবাদিক এবং আন্তর্জাতিক বিভাগের সম্পাদক। আশির দশকে লেবাননে গৃহযুদ্ধ চলাকালীন তাদের পুরো পরিবার বৈরুত ছেড়ে চলে আসে যুক্তরাজ্যে।
সেখানে বাকিংহামশায়ারের ডক্টর চ্যালোনার্স হাইস্কুলে পড়েন আমাল। এরপর ২০০১ সালে অক্সফোর্ডের সেন্ট হিউস কলেজ থেকে আইনতত্ত্ব বিষয়ে নিজের স্নাতক শেষ করেন তিনি।
এরপর আমাল স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তখন থেকে তিন বছরের জন্য আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা সালিভান অ্যান্ড ক্রোমওয়েলে কাজ করেন আইনজীবি হিসেবে। এরপর নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই ২০০৪ সাল থেকে তিনি কাজ করতে শুরু করেন আন্তর্জাতিক আদালতে।
পরের বছরগুলোতে আমাল কাজ করেছেন লেবাননে জাতিসংঘের বিশেষ ট্রাইবুনাল এবং সাবেক যুগোস্লাভিয়ার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।
চলতি বছর গাজায় ইসরায়েলী আগ্রাসন নিয়ে জাতি সংঘের তিন সদস্যবিশিষ্ট বিশেষ কমিশনেরও অংশ ছিলেন আমাল। এই কমিশন এখন খতিয়ে দেখছে যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েল কোনো নিয়মের লঙ্ঘন করেছে কিনা।
ইংরেজি, আরবি এবং ফরাসি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারা আমালের সঙ্গে ইতালিতে প্রথম দেখা হয় ক্লুনির। চলতি বছরের শুরুতে বাগদান সারেন তারা। এর পাঁচ মাসের মধ্যেই ভেনিসে সারলেন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।