মুক্তি পাচ্ছে না ইন্দিরার খুনিদের ওপর নির্মিত সিনেমা

‘কওম দে হিরে’ নামের পাঞ্জাবি সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্র সাতওয়ান্ত সিং এবং বিয়ান্ত সিং নামের দুই শিখ যুবক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর এই দুই দেহরক্ষী ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর গুলি করে হত্যা করে তাঁকে। চলতি বছরে মুক্ত পাওয়ার কথা ছিল এই সিনেমাটির। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধীর হন্তারকদের বীরোচিত উপস্থাপনের অভিযোগ তুলে আটকে দেওয়া হয়েছে সিনেমাটির মুক্তি।

সেঁজুতি শোণিমা নদী বিডিনিউজ টোযেন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2014, 09:18 AM
Updated : 24 August 2014, 09:21 AM

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিনেমাটি মুক্তি পেলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে ভারতজুড়ে। গান্ধীর দল কংগ্রেসের তরফ থেকেও জানানো হয়েছে তীব্র আপত্তি; হুমকি এসেছে কঠোর প্রতিবাদ কর্মসূচিরও। কংগ্রেসের যুব সংগঠনের তরফ থেকে সিনেমাটি নিষিদ্ধের আবেদন জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। আর তাই শুক্রবার সিনেমাটি মুক্তির কথা থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনি ।

‘কওম দে হিরে’ সিনেমাটির গল্প এগিয়েছে সাতওয়ান্ত সিং এবং বিয়ান্ত সিংকে ঘিরে। শিখ পূণ্যস্থান আমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে আশ্রয় নেওয়া অস্ত্রধারী চরমপন্থী শিখদের সরিয়ে দিতে ইন্দিরার নির্দেশে চালানো হয় অপারেশন ব্লু স্টার। ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিখদের জন্য পবিত্রতম এই মন্দির।  তারপর ইন্দিরারই দুই দেহরক্ষী গুলি করে মেরে ফেলেন তাকে। এই ঘটনার পর ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। এ সময় ৩ হাজারেরও বেশি শিখ মারা যান বলে জানা যায়। 

পুলিশের গুলিতে নিহত হন বিয়ান্ত সিং। আর সাতওয়ান্ত সিংকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।

১৯শে অগাস্ট ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন থেকে নির্দেশ আসে সিনেমাটির মুক্তি আটকে দেওয়ার। প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া বলছে, কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সিনেমাটি মুক্তি পেলে দেশেটির আভ্যন্তরীন পরিস্থিতি সংকটময় হয়ে উঠবে।

বেশ কিছুদিন ধরেই সিনেমাটি নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক চলছিল। সিনেমাটির প্রযোজক রাভিন্দার রাভি এরকম একটি বিষয় নিয়ে সিনেমা তৈরির প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেছিলেন, “বিশ্বজুড়েই নানা ধরনের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে সিনেমা তৈরী হয়েছে। তাহলে মিসেস গান্ধীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সিনেমা তৈরিতে দোষ কোথায়?”

তিনি আরও জানান, “আমি আইন কানুন মেনেই সিনেমাটি তৈরি করেছি। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে মামলা করা হয়েছিল, সেটা খুব ভালোভাবে পর্যালোচনা করেছি। এছাড়া, বিয়ান্ত সিং এবং সাতওয়ান্ত সিং-এর পরিবারের সঙ্গেও আমি অনেক সময় কাটিয়েছি সিনেমা তৈরির আগে।”

তবে সিনেমাটি আটকে দেওয়ার নির্দেশ আসার পর অবশ্য এ নিয়ে এখনও পযর্ন্ত কোনো মন্তব্য করেননি এই নির্মাতা।