টিএসসিতে স্প্যানিশ মূর্ছনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি শনিবার সন্ধ্যায় মেতেছে স্প্যানিশ মূর্ছনায়। ওইদিন কিংবদন্তি স্প্যানিশ ফ্লামেঙ্কো গিটারিস্ট পাকো দে লুসিয়া স্মরণে কনসার্টের আয়োজন করা হয়।

মিথুন বিশ্বাসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2014, 12:33 PM
Updated : 21 April 2014, 02:26 PM

এই সুরের আবেশে অংশ নেন স্প্যানিশ গিটারিস্ট দানিয়েল ‘মেলন’ জিমেনেজ ও মারিয়ানো আবেলো। আয়োজনে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্প্যানিশ ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র।

আয়োজকদের পক্ষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্প্যানিশ ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের সমন্বয়কারী আমপারো পোরতা প্রথমেই স্মরণ করেন সদ্যপ্রয়াত কথার জাদুকর গ্যাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ও পাকো দে লুসিয়াকে।

এরপরই মঞ্চে আসেন আবেলো ও জিমেনেজ। শুরুটা যেন হল বিষাদময়। গিটারের ‘ফ্লামেঙ্কো’ ঝংকারে মনে হয় যেন সুদূর আন্দালুসিয়ায় মরু হাওয়া খেলে যাওয়া কোনো এক দুর্গ থেকে ভেসে আসছে জিপসি গিটারিস্টের করুণ সুর।

এরচেয়ে ভালো শ্রদ্ধা পাকো দে লুসিয়াকে কীভাবে দেখানো যেতে পারে!

জিমেনেজ বাজালেন শুধুই গিটার! ছয় তারের মুন্সিয়ানার পাশাপাশি গিটার উল্টিয়ে তবলার মতো করে বাজালেন। সঙ্গী তবলচির সঙ্গে যুগলবন্দি করলেন কিছুটা সময়, একেবারে স্প্যানিশ কায়দায়।

বলে রাখা ভালো, এই জিমেনেজ ২০১০ থেকে ২০১২ সালে রবি শংকরের মেয়ে আনুশকা শংকরের সঙ্গে ‘ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ করেছেন।

কনসার্টের এক ফাঁকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন রাখতেই জিমেনেজ বলেন, “সারা ইউরোপ, আমেরিকা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে বাজিয়েছি। ভারতে হয়েছে অসাধারণ অভিজ্ঞতা। রাজস্থানের ‘বানজারা’ নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে বাজিয়ে অবাক হয়েছি। কারণ তাদের নাচের কিছু বিষয়ের সঙ্গে ফ্লামেঙ্কো ধারার অদ্ভুত মিল রয়েছে।”    

এদিকে আবেলো বাজালেন বাঁশি ও সাক্সোফোন। গিটারের সঙ্গে যুগলবন্দি যেমন অসাধারণ তেমনি তার দ্রুতলয়ের বংশীবাদন। আবার শব্দের ওঠানামায় উপস্থিত দর্শকদের দেখিয়ে দিলেন কতটা পটু শিল্পী তিনি।

সংগীতের একজন শিক্ষক, যথেষ্ট সদালাপি ভদ্রলোক, টিএসসি অডিটরিয়ামের অসহ্য গরমে ঘেমে-নেয়ে একাকার হলেও কথা বলবার সময় হাসিটি ঠিকই টিকে থাকল।

আবেলো বলেন, “এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ঢাকায় এলাম। এত গরমেও ‘হাউজফুল’ দর্শকের সামনে বাজিয়ে খুবই আনন্দিত আমি।”

 

দুজন মিলে বাজিয়েছেন এক ঘণ্টারও বেশি। স্প্যানিশ সংগীতশিল্পী চিক করিয়ার দুটি সৃষ্টি, আবেলোর দুটি কম্পোজিশন ও বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ও প্রচলিত ফ্লামেঙ্কো সুর।

এই দুই স্প্যানিশ শিল্পীর সঙ্গে সংগত করেছেন দেশি তিন সংগীতশিল্পী।        

তবে সম্মান দেখিয়েই বাজালেন না পাকো দে লুসিয়ার নিজস্ব কোনো সৃষ্টি।

আবেলো ও জিমেনেজ দুজনেই একমত-- “পাকো দে লুসিয়া একজন কিংবদন্তি, তাকে আমরা স্মরণ ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করলাম, আমাদের মতো করে তাকে অনেক উঁচুতে রেখে।”