চলে গেলেন বিপুল ভট্টাচার্য্য

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা বিপুল ভট্টাচার্য শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় রাজধানীর ধানমন্ডির আহমেদ মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৮ বছর।

রাশেদ শাওনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 July 2013, 01:35 AM
Updated : 6 July 2013, 05:03 AM

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি গোলাম কুদ্দুস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। শুক্রবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে হাসপাতালে তিনি মারা যান।”

গোলাম কুদ্দুস আরও বলেন, “তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালে রাখা হবে। এর আগে ছায়ানটের এই শিক্ষককে তার কর্মক্ষেত্রে নেওয়া হবে। এরপরে মরদেহ নেওয়া হবে তার মোহাম্মদপুরের বাসায়। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পরে বারডেমের হিমঘরে নেওয়া হবে।”

“সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বিপুল ভট্টচার্য্যরে মরদেহ ৬ জুন সকাল ১১ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে সেখানে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত লাশ রাখা হবে। এরপরে পোস্তগোলা শ্মশানঘাটে তার মরদেহ দাহ করা হবে।” বলেন গোলাম কুদ্দুস।

১৯৫৫ সালে কিশোরগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি গানের মাধ্যমে যুদ্ধ করেছিলেন। তারেক মাসুদ পরিচালিত ‘মুক্তির গান’ নামক চলচ্চিত্রে তার কাজ তুলে ধরা হয়েছে। মুক্তির গানে ১১টি গান আছে, যার অধিকাংশই লোকসুরভিত্তিক। এই গানগুলোর মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সব গানই গেয়েছেন বিপুল ভট্টাচার্য।

১৯৭১ সালে গান নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছিলেন মাইলের পর মাইল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিপুল ভট্টাচার্যের গাওয়া গান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রেরণা জুগিয়েছে।

বিপুল ভট্টাচার্য শরণার্থী শিবিরের হাজার হাজার মানুষের মনে সাহস সঞ্চার করেছিলেন গানের মাধ্যমে। তিনি ছিলেন মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থার সদস্য।

মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থায় আরও ছিলেন লুবনা মরিয়ম, তারেক আলী, মাহমুদুর রহমান বেণু, নায়লা খান ,স্বপন চৌধুরী, শাহিন সামাদ, দেবব্রত চৌধুরী, দুলালচন্দ্র শীল,মোশাদ আলী।

সদস্যরা শরণার্থী শিবিরে, মুক্তি ফৌজের ক্যাম্পে এবং মুক্তাঞ্চলে গান গেয়ে বেড়াতেন।

 ১৯৯৩ সালে এই গানগুলো আবার ধারণ করা হয় সিনেমায় ব্যবহারের জন্য।